নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আইন প্রয়োগ করে নির্বাচন করব। এই প্রতিশ্রুতি ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দিতে চাই।
বুধবার (১ মার্চ) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ভোটদানের হার কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, সেগুলোর নানান রকম পরিস্থিতি ছিল। একটি বড় রাজনৈতিক দল কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করছে না। স্বাভাবিকভাবেই তাদের যারা সাপোর্টার তারা তো ভোট দিতে আসেন না। এজন্য ভোটের কাস্টিং কমে যাচ্ছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে করোনার মধ্যে আমাদের কিছু নির্বাচন করতে হয়েছে। স্বাভাবিক কারণে তখন অনেকে ভয়ে ভোট দিতে আসেননি।
তিনি বলেন, উপনির্বাচনগুলো যখন হয়, উপনির্বাচনের মেয়াদ থাকে অল্প এবং এতে সরকারের কোনো পরিবর্তন হয় না। তাই ভোটদানে আগ্রহ কম থাকে। সামনের যে জাতীয় নির্বাচন হবে সে নির্বাচনে কিন্তু সরকার পরিবর্তন হতে পারে। সেই সুযোগ যেহেতু এখানে রয়েছে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যে দলকে ভোট দেবে, সেই দল সরকার গঠন করবে। সে ক্ষেত্রে ভোটার ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করব, সকল রাজনৈতিক দলের আমাদেরকে আস্থায় নেওয়া উচিত। কারণ দায়িত্ব নেওয়ার পর যতগুলো নির্বাচন করেছি কেউ বলতে পারবে না, আমরা কোনো পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছি। প্রত্যেকটা নির্বাচনই আমরা সুষ্ঠুভাবে করার চেষ্টা করেছি। আমরা আশা করি সংসদ নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। আমাদের পক্ষ থেকে যত রকম ব্যবস্থা নেওয়া দরকার নির্বাচন কমিশন থেকে আমরা নেব। ‘পার্টিসিপেটরি’ নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি।
যারা নির্বাচনে আসছে না তাদেরকে নির্বাচনে আনার জন্য শেষ পর্যন্ত আপনাদের কোনো ভূমিকা থাকবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো আছে, শেষ পর্যন্ত থাকবে। বুঝতে হবে আমাদের ভূমিকা কি। আমরা আশাও করি, সব দল নির্বাচনে আসবে। আমাদের কাজ হলো নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করা। আমরা যদি নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করি, তাহলে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে আসবে। যারা আসছে না তারা বলছে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এটা তারা মনে করেন না। এই মনে করার পেছনে অন্তত আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। স্বাধীন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আমাদের সংবিধান দায়িত্ব ও ক্ষমতা দিয়েছে তার পুরোটা প্রয়োগ করে সুষ্ঠু নির্বাচন করব। সেই প্রতিশ্রুতি আমরা ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দিতে চাই।
২ মার্চ ভোটার দিবসের বিষয়ে তিনি বলেন, ভোটার দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে- সার্কভুক্ত দেশগুলোর একটা সংস্থা আছে। তারা এক সময় দেখলেন যে সার্কভুক্ত দেশগুলোর ভোটারদের যে অধিকার, দায়িত্বগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জনগণ সচেতন নয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা চর্চার ক্ষেত্রে ভোট ও ভোটারের ভূমিকা সবচেয়ে বড়। ভোটাররা যদি ভোটার হওয়া ও ভোটদানের ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় থাকে, তারা যদি আগ্রহ না দেখায় তাহলে গণতন্ত্রের যে সুষ্ঠু চর্চা, সেটা অনেকটা নিখুঁত হয় না। এ জন্যই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, প্রতি বছর সার্কভুক্ত দেশগুলো একটি দিন ভোটার দিবস হিসেবে পালন করবে। যাতে সব মানুষ জানতে পারেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা, গণতন্ত্র চর্চায় ভোটারদের বড় ভূমিকা রয়েছে। এটা একটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানানো। সে অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে আমরা এটি করে আসছি। আগে ১ মার্চ এই দিবস পালন করা হতো। এখন ২ মার্চ পালন করা হয়। এদিন যারা আগের ভোটার আছেন, যারা মারা গেছেন তাদের নাম কাটা, নতুন ভোটার হয়েছেন এটি যুক্ত করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে কত ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তা এ দিন জানতে পারবেন।