
তুহিন হোসেন, পাবনা : পাবনার ঈশ্বরদীতে পুলিশকে জুয়ার আসর দেখিয়ে দিয়ে বিপাকে পড়েছেন মোঃ মহিম নামের এক যুবক। আটককৃত ব্যক্তির নিকট থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়েছেন বিট পুলিশ কর্মকর্তা। এখন সেই টাকা ওই যুবকের পরিবারের নিকট থেকে আদায় করতে দফায় দফায় হুমকি, বিচারশালিস হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে রীতিমত বেশ হৈচৈ পড়েছে গেছে।
ঘটনাটি গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে আসছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সুত্র মতে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ( সোমবার) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের চর আওতাপাড়ায় এলাকায় ৭-৮জনের একটি জুয়ারু দল জুয়া খেলতে ছিল। সেই সময় থানা পুলিশের সাহাপুর ইউনিয়ন বিট অফিসার এসআই নাসির একজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে অভিযান চালান। পথে মধ্যে পুলিশের সোর্স সাব্বির হোসেন ওরফে ল্যাংড়া সাব্বিরের কথা মত স্থানীয় যুবক মহিম পুলিশকে জুয়ার আসর দেখিয়ে দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়ারুরা পালিয়ে যায়। এই সময় ঘটনাস্থলে থাকা সাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের একজন সাবেক মেম্বারের সামনে তিন পুরিয়া গাঁজা ফেলে আটক করা হয়। এই সময় তাকে চরথাপ্পরও মারা হয়। অনেক দরকষাকষির পর তার নিকট থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই পুলিশকে দেওয়া ১৮ হাজার টাকা ফেরত নিতে ওই সাবেক মেম্বার ও তার পক্ষের লোকজন মহিমের পরিবারের উপর চাপ দিয়ে আসছে। এমনকি তারা পুলিশের সোর্স ল্যাংড়া সাব্বিরকে ধরে নিয়ে মাচায় দীর্ঘক্ষণ বসিয়েও রাখে।
পুলিশের সোর্স বলে পরিচিত ল্যাংড়া সাব্বির জানান, জুয়ার আসরটি মহিমের বাড়ির দিকেই বসেছিল। এই কারণে জায়গাটি তাকে চিনিয়ে দিতে বলা হয়েছিল। সে দেখিয়ে দিয়েছিল। এই অপরাধে তার পরিবারের নিকট থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে শুনেছি।
মহিম ও তার বাবার আব্দুল কুদ্দুস জানান, ঘটনাস্থল থেকে আটক ওই সাবেক মেম্বারের নিকট থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। মহিম পুলিশকে দেখিয়ে দেওয়ার কারণে ওই মেম্বারকে আটক করে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে। তাই সেই টাকা মহিমকেই দিতে হবে বলে দাবী করে মেম্বারের পক্ষ থেকে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। মেম্বারের পক্ষ থেকে রাসেল নামে এক যুবককেও টাকা নিতে পাঠানো হয়েছে। চলার পথে পুলিশের জিজ্ঞাসায় সহাযোগিতা স্বরুপ জুয়ার আসর দেখিয়ে দিয়ে এখন পারিবারিকভাবেই তারা বিপাকে পড়েছেন। ভয়ে থানাতেও আসতে সাহস পাচ্ছে না। কারণ আবার যদি নতুন করে বিপদে পড়েন। তাই চাহিদামত টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও তারা জানান।
এই বিষয়ে রাসেল জানান, সাবেক ওই মেম্বার এলাকার একজন সম্মানি ব্যক্তি। তাকে কয়েকটি চড় থাপ্পরও মেরেছে। তার সামনে গাঁজা ফেলে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ১৮ হাজার টাকা পুলিশ অফিসার নিয়েছে। এই টাকা মহিমের পরিবারের নিকট থেকে ফেরত চাওয়া হয়েছে।
সাবেক ওই মেম্বার জানান, আমাকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। পুলিশ ধান্দা করেছে। মহিমের পরিবারের পরিবারের নিকট থেকে টাকা ফেরত পেতে হুমকি ধামকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে মেম্বার জানান, আমি মাদক ব্যবসায়ী না তা প্রমান করার জন্য পুলিশের সোর্স ল্যাংড়া সাব্বিরকে ডেকে আনা হয়েছিল।
ঈশ্বরদী থানার এসআই সাহাপুর ইউনিয়নের বিট অফিসার নাসির জানান, মোবাইলে কোন কথা বলবো না। সামনা সামনি দেখা করে কথা বলবো।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি। মহিমের পরিবার থেকে কোন অভিযোগ করা হলে অবশ্যয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। তারপরও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হবে।