
তুহিন হোসেন,পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীতে যাত্রীবাহী সবুজ সিএনজির সঙ্গে প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে সিএনজি চালক নিহত ও ৫ যাত্রী গুরুতর আহতের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনাস্থলে থেকে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা আহতের উদ্ধার কওে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে আহত রোগীর স্বজনরা না থাকায় নিজের খরচে আহত মোহাম্মদ মিল্টন মোল্লা (২৭) নামের একজনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
গত বুধবার (২১ ফ্রেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে পাবনা-পাকশী আঞ্চলিক সড়কের ঈশ্বরদীর সাহাপুর মসজিদ মোড়ে এই দূর্ঘটনা ঘটে। নিহত সিএনজি চালক মোঃ শরীফ ( ৪০) ঈশ্বরদীর আওতাপাড়ার জামাল মিয়ার ছেলে।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম দূর্ঘটনার খবর শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দ্রুততার সঙ্গে উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক প্রেরণের ব্যবস্থা করেন। অভিভাবকহীন এক রোগীকে নিজের পকেটের টাকা দিয়ে রামেক পাঠান। এই ঘটনাটিতে ভূয়সী প্রশংসায় ভাসছেন ওসি রফিকুল ইসলাম। এরআগেও বেশ কয়েকটি ঘটনার কারণে সবাই বর্তমান ওসি রফিকুল ইসলামকে মানবিক ওসি হিসেবে মনে করছেন।
গুরুতর আহতরা হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের জল্লাদখালি পাড়ার মজিবুর রহমানের ছেলে মোহাম্মাদ মিল্টন, ঈশ্বরদীর মহাদেবপুর গ্রামের সোহরাব প্রামানিকের ছেলে শরীফ প্রামানিক, পাবনার দাপুনিয়ার আজাহার প্রামানিকের ছেলে উজির হোসেন, প্রাইভেটকারের যাত্রী পাবনা সদর থানার বাগচিপাড়ার আব্দুল মান্নানের মেয়ে আখি খাতুন ও কামালপুর গ্রামের মোজাম্মেল হক ফকিরের ছেলে মোঃ সুমন।
থানা ও ফায়ার সার্ভিস সুত্র জানায়, ঘটনার সময় পাকশীর রুপপুর থেকে ৬ যাত্রী নিয়ে আওতাপাড়ায় যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে একটি ভ্যানকে ধাক্কা দিয়ে সড়কের মাঝে চলে আসে। এই সময় আওতাপাড়া থেকে রুপপুরের দিকে আসা প্রাইভেটকারের সঙ্গে সিএনজিরটি মুখোমুখি সংঘর্ষ লেগে এই দূর্ঘটনা ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ডাক্তার নিশাত হাসনা আনজুম জানান, আহতদের অবস্থাগুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) প্রেরণ করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের মধ্যে একজনের কোন অভিভাবক না থাকায় নিজের খরচে রামেক প্রেরণ করে মানবতার পরিচয় দিয়েছেন ওসি।
গুরুতর মোহাম্মাদ মিল্টন মোল্লার মা শেফালী বেগম জানান, ঘটনার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমাদের পরিবারের কেউ ছিল না। কিন্তু আমার ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ। থানার ওসি সাহেব যদি দয়া করে আমার ছেলেকে রামেক এম্বুলেন্সভাড়া দিয়ে না পাঠাতেন তাহলে আমার ছেলেকে বাঁচানো সম্ভব হতো না। যদিও আমার ছেলের অবস্থা এখনও ভাল না।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, দূর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে। আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে গুরুতর আহত অভিভাবকহীন রোগীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেছি। পুলিশরা সব সময়ই ভাল কাজের সঙ্গে থাকে। অসহায় ও বিপদগ্রস্থদের সহযোগিতা করে। আমিও তাই করেছি।