উলিপুরে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি

পিবিএ, উলিপুর (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের উলিপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষজন পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার্ত মানুষেরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেও বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও গবাদী পশু নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত ত্রান তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। বন্যা দূর্গতরা শুকনো খাবারের জন্য হাহাকার করছেন।

উপজেলা ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যা কবলিত এলাকার জন্য জেলা থেকে প্রাপ্ত ৩শ প্যাকেট শুকনো খাবার, ৪৫ মেঃ টন জিআর চাল, ৭০টি তাবু বিতরণ করা হয়েছে। আরও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরনের প্রস্তুতি চলছে। এদিকে বন্যার্ত মানুষের অভিযোগ অধিকাংশ এলাকায় এখন পর্যন্ত ত্রাণ পৌছেনি।

বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বানভাসী নজির আলী (৬৫), আবুল হোসেন (৫১), মোনছার আলী (৭০), আজম (৪৫), কোব্বাস মিয়া (৫৫), হাতিয়া ইউনিয়নের আব্দুল হাকিম (৪২), রফিক মিয়া (৩৫), মোসলেহা (২৮), ধনরাজ দাস (৬৮) ও সুফিয়া বেগম (৪৫)সহ অনেকে জানান, কয়েক দিন ধরে পানি বন্দি অবস্থায় আছি। শুকনো খাবার যা ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি।

বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন পিবিএ’কে বলেন, তার ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। বুধবার পর্যন্ত ৫শ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে যা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন পিবিএ’কে জানান, এ ইউনিয়নে ৭,৮ হাজার পরিবার পানি বন্দি। এ পর্যন্ত কোন ত্রাণ বিতরণ করতে পারিনি। ৪মেঃ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি যা আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ৫শ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হবে।

বজরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম আমীন বলেন, নয় থেকে দশ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। এ সব পানি বন্দি মানুষের জন্য মাত্র সাড়ে ৫মেঃ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। এ চাল সাড়ে পাঁচশ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা যাবে। এটা লজ্জার ব্যাপার। সবাই ত্রাণ চাচ্ছে। বন্যর্তরা শুকনো খাবারের প্রতি আকৃষ্ট বেশি কিন্তু আমার ইউনিয়নে শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়নি। প্রায় একই অবস্থা উপজেলার বন্যা কবলিত ১৩টি ইউনিয়নে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ত্রাণ কর্মকর্তা (অঃ দাঃ) সিরাজউদ্দৌলা বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ বরাদ্দ না পেলে এ চাহিদা পূরন করা সম্ভব হবে না। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ যা পাওয়া যাচ্ছে তা সাথে সাথেই জনপ্রতিনিধের অনুকুলে দেয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের জানান, বন্যার্তদের মাঝে ৪৫ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ১ হাজার ৯শত পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরনের জন্য প্যাকেট তৈরি করা হচ্ছে।

ইকে/রোকনুজ্জামান মানু/ইকে

আরও পড়ুন...