পিবিএ, কক্সবাজার: কক্সবাজারে বাকখাঁলী নদী দখল করে গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা। কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না বাঁকখালী নদী দখল। প্রতিদিন নদীর দু’পাশ গিলে খাচ্ছে দখলদারেরা। বর্তমানে নতুন করে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে দখলদার সিন্ডিকেট।
শহরের পেশকার পাড়া বাঁকখালী তীর দখল করে গড়ে উঠছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। সেখানে নদী দখল করে কেউ করেছেন আবাসন ব্যবসা, কেউবা বানিয়েছেন চিংড়িঘের। নদীর জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে লবণের কারখানা, মাছের আড়ত, করাতকল, শুঁটকিমহাল, বরফকলসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ দখলদারদের তালিকা করে। সে তালিকায় ৯২ জনের নাম রয়েছে। তবে তালিকা হলেও দীর্ঘদিন ধরে দখলদারদের উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শহরের পেশকারপাড়ায় নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, পাড় ভরাট করে ঘরবাড়ি তৈরির জন্য বিভিন্ন আকারের প্লট বানানোর কাজ চলছে। কোনো প্লট চার কাঠার আবার কোনোটি পাঁচ কাঠার। কয়েকটি পটে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। শহরের বিভিন্ন পাহাড় থেকে মাটি এনে ভরাট হচ্ছে এসব পট। দেখে বোঝার উপায় নেই এখানে একসময় নদী ছিল। পট ও স্থাপনা রক্ষায় দখলদারেরা নিজেদের টাকায় নদীর জোয়ারের পানি ঠেকাতে মাটি ফেলে বাঁধও নির্মাণ করেছেন। নদীর স্রোতধারার মাত্র ২০ মিটারের মধ্যে চারুকা আর্টের সত্ত্বাধিকারি নজরুলের নেতৃত্বে একটি ভবন নির্মাণ হচ্ছে। তার পাশেই তার ভাইও স্থাপনা নির্মাণ করছেন।
নজরুলের নেতৃত্বে আশপাশে সোহেল, দেলোয়ার হোসেন, শাহীনা আক্তার, শহরের হকার মার্কেটের ব্যবসায়ী জাকের হোসেন, এন্ডারসন সড়কের ব্যবসায়ী সিরাজুল হক ভবন নির্মাণ ও পট বানানোর কাজ করছেন। ইতমধ্যে এখানে প্রায় ২৫/৩০ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) থেকে অনুমতি নেয়া হয়নি। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।
স্থাপনা নির্মাণ করা নজরুল বলেন, অনেকের দেখাদেখি তিনিও ভবন তৈরি করেছেন। এ পর্যন্ত কেউ বাধাঁ দেয়নি। তার মতো সোহেল, জাকের, সিরাজুল হক, দেলোয়ার হোসেনও একই কথা বলেন।
কক্সবাজার পৌরসভা কার্যালয় সূত্র জানায়, কস্তুরাঘাট, নূরপাড়া, পেশকারপাড়া, টেকপাড়া, নুনিয়াছটা, নতুন বাহারছড়া, মাঝিরঘাট এলাকায় গত কয়েক বছরে বাঁকখালী নদীর সীমানার প্রায় ৯৮ একর জমি দখল করে নানা অবকাঠামো তৈরি হয়েছে।
সদর ভূমি অফিসের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, সরেজমিনে গিয়ে পেশকার পাড়ায় যেসব প্লট ভরাট ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে শীঘ্রই তা বন্ধ করা হবে।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এ,এইচ,এম মাহফুজুর রহমান পিবিএ’কে বলেন, ওখানে বার বার অভিযান চালানো হয়েছে। তবুও দখলদারেরা থামছে না। এবার নতুন করে অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, কেউ আইনের উর্ধ্বে নই। বাঁকখালীতে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালানো হবে।
এ বিষয়ে কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ পিবিএ’কে বলেন, বাঁকখালী নদীর বুকে কিংবা তীরে ভবন নির্মাণের জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারা এই ভবন নির্মাণ করেছেন-তা অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিবিএ/টিএ/হক