কাপাসিয়ায় খাবারের খোঁজে লোকালয়ে বানর, বাসা-বাড়ি, হাট-বাজারে হানা


সঞ্জীব কুমার দাস, পিবিএ, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : গাজীপুরের কাপাসিয়া উজেলায় খাদ্যের খোঁজে দল বেঁধে ঘুরছে বানর। ক্ষুধার তাড়নায় হানা দিচ্ছে গ্রামের বাড়ি বাড়ি। হাট-বাজার থেকে বাজার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মানুষের হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে ব্যাগ। নষ্ট করছে গাছের ফলফলাদী। কেড়ে নিচ্ছে মানুষের ঘরের খাদ্য সামগ্রী। তাড়া করলে বানর গুলো দল বেঁধে হামলা করে আহত করছে মানুষকে। ছোট বাচ্চারা ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। পাহাড়া দিয়ে রাখতে হচ্ছে রান্না ঘর। বানর গুলো সুযোগ বুঝে ঘর থেকে হাঁড়ি নিয়ে ভাত খাচ্ছে। বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে গ্রামবাসি। উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পানবরাইট, কুরুলিয়া, দড়িমেরুন তেতুলিয়া এলাকায় তাদের উপদ্রব রিতিমতো আতঙ্কের পর্যায়ে।

সরেজমিনে এলাকা গুলোতে দেখা গেছে, বানরের দল এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফালাফি করছে। তাদের এমন খেলা দেখতে মাঝে মাঝেই দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছে এলাকা গুলোতে। কলা, বাদাম, ব্রেট ইত্যাদি খেতে দিলে দল বেঁধে মানুষের কাছে আসছে তারা। দর্শনার্থীদের আনাগোনা কমে গেলে দেখা দিচ্ছে বানরের খদ্যাভাব। তখন তারা স্থানীয়দের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। সংখ্যায় অনেক বেশি হওয়ায় বানরের অত্যাচারে বাঁধা দিতে ভয় পাচ্ছে গ্রামের লোকজন। ক্ষুধার তাড়নায় খাবারের অভাবে অনেক সময় আক্রমণ করে বসছে শিশু ও বৃদ্ধাদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার নিজ উদ্যোগে বানরদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করেছিল। ২-৩ মাস রীতিমতো খাদ্য দেওয়া হয়। তখন বানরগুলো শান্ত ছিল। এখন খাদ্য না পাওয়ার কারণে তাদের আক্রমনের মাত্রা বেড়ে গেছে। মানুষের মনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

এ ব্যাপারে কথা হয় কুরুলিয়া গ্রামের খলিল মোল্লা, মতিউর রহমান, শুভল চন্দ্র দাশ, দিগেন্দ্র চন্দ্র মন্ডলের সাথে। তারা বলেন, জন্মের পর থেকেই গ্রামের ভিতরে বানর গুলো দেখছি। ধীরে ধীরে তাদের সংখ্যা বাড়ছে। এখন ২ হাজারের মতো হবে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। ধান, চাউল, মুরগির পাড়া ডিম, কলা গাছের অধা পাকা কলা, ফল, সবজি কিছুই তাদের জন্য রাখতে পারি না। মাঝে মাঝে ঘরের ভিতরেও ঢুকে পড়ে।

রান্না করা ভাতের হাড়ি সুযোগ পেলে ঘর থেকে ছিনিয়ে নেয়। রোদে ধান শুকানো যায় না। সব ধান ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এলোমেলো করে ফেলে বলে জানান গৃহবধূ হালিমা।

বন বিভাগের সূর্যনারায়ণপুর বিট অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, বন বিভাগের নির্দিষ্ট এলাকায় না থাকার করণে তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা হচ্ছে না। তারা লোকালয় থেকে যা পায় তাই খায়। তাদের খাদ্য সংকট রয়েছে।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. ইসমত আরা বলেন, এ বিষয়ে আমার আগে জানা ছিল না। এতো বানর কাপাসিয়াতে আছে! বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য বানরের খাদ্যের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. আমানত হোসেন খান ।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...