পিবিএ ডেস্ক : দীর্ঘ দ্বন্দ্ব কাটিয়ে গত বছর জুনে এক টেবিলে বসেছিলেন দুই নেতা। সিঙ্গাপুরের ওই ‘ঐতিহাসিক’ বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে সর্বোচ্চ আশ্বাস দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষে ফের বৈঠকে বসার কথা দু’জনের। কিন্তু এরই মধ্যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বোমা ফাটাল একটি মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ় (সিএসআইএস) গতকাল দাবি করেছে, প্রথম বৈঠকে নিজেদের ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির কথা লুকিয়েছে পিয়ংইয়্যাং। এছাড়াও এখনও সক্রিয় একটি ঘাঁটি সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্টও পেশ করেছে ওই সংস্থা।
সম্প্রতি কিমের প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে দেখা করে যাওয়ার পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠক নিয়েও তিনি সমান আশাবাদী। কিন্তু বিরোধী ডেমোক্র্যাট শিবির এতে নারাজ। কারণ তাদের দাবি, সিঙ্গাপুরের বৈঠকের পরেও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে পিয়ংইয়্যাং। সিএসআইএসের রিপোর্ট সেই আগুনেই ঘি ঢালল। রিপোর্টে কিমের যে ঘাঁটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, সেই সাইনো-রি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার অসামরিক ক্ষেত্র থেকে ২১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৮ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে তৈরি ওই এলাকাটি পিয়ংইয়্যাংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির প্রাণকেন্দ্র। বলা যায় সদর দফতর। যে কোনও দেশের একটি সেনা ঘাঁটির সমান বড় এই ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে নডং-১ নামে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাখা হয়েছে।
এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এমনকি পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা গুয়াম (যা আসলে আমেরিকার অন্তর্গত) পর্যন্ত পৌঁছতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়া সম্ভব ওই ঘাঁটি থেকে। গত ডিসেম্বরের উপগ্রহচিত্র থেকে দেখা গিয়েছে, ওই ঘাঁটিতে মাটির তলায় রয়েছে একটি বাঙ্কার। স্যাটেলাইটে তার প্রবেশ পথের ছবিও উঠেছে।
সিএসআইএসের দাবি, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার সময় এমন প্রায় ২০টি ঘাঁটির কথা চেপে গেছেন কিম। যার অর্থ, অঘোষিত পরমাণু কর্মসূচি কখনওই কোনও চুক্তির আওতায় আসবে না। আর উত্তর কোরিয়া তারই ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে বলে মনে করছেন অনেকে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ঘোষিত নয় এমন কোনও ঘাঁটি বা পরীক্ষাগার নিয়ে নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির রাস্তাতেই হাঁটবে না কিমের দেশ। উত্তর কোরিয়া নিশ্চিত অন্য খেলা খেলছে।’ এই রিপোর্ট নিয়ে অবশ্য হোয়াইট হাউসের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।
পিবিএ/জিজি