পিবিএ,কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এখনও সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার নদ-নদীর অববাহিকার চরা ল ও নিম্না লের ঘর-বাড়ি এখনও তলিয়ে থাকায় উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়া বানভাসীরা ঘরে ফিরতে পারছে না।
আবার দুর্গম চরা লের বেশকিছু পরিবার দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দী থাকায় তাদের দুর্ভোগ বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট। ছড়িয়ে পড়ছে পানি বাহিত রোগ। চারন ভুমি তলিয়ে থাকায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট আরো প্রকট আকার ধারন করেছে। এ অবস্থায় উঁচু সড়ক, বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া মানুষজন ঘর-বাড়িতে ফিরে যেতে পারছে না।
অন্যদিকে শুক্রবার দুপুরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোড়কমন্ডপ গ্রামের আনন্দ বাজার এলাকায় বাড়ির সামনে বন্যার পানিতে পড়ে সাথী খাতুন (৩) নামের এক কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিশু কন্যা সাথী চরগোড়ক মন্ডপ গ্রামের সোলেমান হকের মেয়ে।
এ নিয়ে চলতি বন্যায় এ পর্যন্ত জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ১৭ শিশুসহ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে উলিপুর উপজেলায় ৯ শিশুসহ ১১ জন, চিলমারী উপজেলায় ৬ শিশু, রৌমারী উপজেলায় ১ জন, রাজিবপুর উপজেলায় ১ শিশু ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ১ জন।
সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: শাহ্ আলম জানান, ঘর-বাড়ি এবং ক্ষেতে খামারে বন্যার পানি থাকায় শ্রমজীবি মানুষের হাতে কোন কাজ নেই। বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় এসব শ্রমজীবি মানুষই এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। এদের কর্মসংস্থান চালু না হওয়া পর্যন্ত তাদের ত্রাণ সহায়তা করা প্রয়োজন।
জেলার বন্যা কবলিত প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষের জন্য এ পর্যন্ত সরকারী ভাবে ১ হাজার মেট্রিক টন চাল, ১০ হাজার ৫শ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২০ লাখ টাকা এবং শিশু ও গবাদি পশুর খাদ্যের জন্য ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশিে বেসরকারী ভাবে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, সংগঠন ও ব্যাক্তি উদ্যোগে বন্যা দুর্গত এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
পিবিএ/মনিরুল ইসলাম বাবু/ ইকে