পিবিএ,ডেস্ক: অবশেষে আগামী মঙ্গলবার (১২ মে) থেকে দেশে ফিরতে যাচ্ছেন কুয়েতের প্রত্যাবাসন ক্যাম্পে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা। সাধারণ ক্ষমায় দেশে ফিরতে চেয়েও কুয়েতের ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করা প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশির জন্য ৬টি ফ্লাইট প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রথম দফায় এই ৬ ফ্লাইটে ১,৮০০ জনের মতো বাংলাদেশি ফিরবেন বলে জানিয়েছেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম।
রোববার তিনি বলেন, আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশিদের নিয়ে প্রথম ফ্লাইটটি কুয়েত থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। এরপর বুধ, শনি ও রোববার পরবর্তী ফ্লাইটের দিন ধার্য করা হয়েছে। এভাবে এক মাসের মধ্যেই কুয়েতের বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশিকে দেশে পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই গত মাসে বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে কুয়েত সরকার। এই পাঁচ হাজার বাংলাদেশি এ সুযোগে দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য তাদের কুয়েতের বিভিন্ন অস্থায়ী ক্যাম্পে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই এসব বাংলাদেশি প্রত্যাবাসন ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তাছাড়া বিমানে তোলার আগে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। ঢাকাতেও পরীক্ষা করে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে তাদের।
এসব ক্যাম্পে অসংখ্য প্রবাসী মানবেতর জীবন-যাপনের অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আবুল কালাম বলেন, দেখুন, ক্যাম্পের দায়িত্ব পুরোটাই কুয়েত সরকারের হাতে। তবে এই করোনা আতঙ্কের মধ্যেও প্রায় প্রতিদিনই দূতাবাসের কর্মকর্তারা কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের দ্রুত দেশে পাঠানোর তাগিদ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেব এ কথা কুয়েতকে আগেই জানানো হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তারা ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে পারছিল না।
এদিকে কুয়েত সরকারের সাধারণ ক্ষমা নিয়ে দেশে ফিরতে চেয়েও প্রত্যাবাসন ক্যাম্পে প্রাণ দিয়েছেন দুজন বাংলাদেশি। রাষ্ট্রদূত দুঃখ প্রকাশ করে জানান, সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরেও তারা জীবিত দেশে ফিরতে পারলেন না। এখন তাদের লাশই আমাদের দেশে পাঠাতে হচ্ছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসের কারণে নিয়মিত ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার পর থেকে কুয়েতে বিভিন্ন রোগে (করোনা ছাড়া) ৩০ জন বাংলাদশি মারা গেছেন। বিভিন্ন মর্গে তাদের মরদেহ রাখা হয়েছে। এসব মরদেহ ফিরিয়ে নিতেও দেশটি চাপ দিচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রত্যাবাসন ক্যাম্পে মারা যাওয়া দুই বাংলাদেশির লাশ যেসব ফ্লাইটে বাংলাদেশিদের ঢাকায় পাঠানো হবে সেসব ফ্লাইটে দেশে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি বাকি মরদেহ এতে পাঠানো যায় কি না।
এদিকে পররাষ্ট্র এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। চার হাজার বিদেশফেরত প্রবাসীর একসঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সুবিধা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে তাদের রাখা হবে।
পিবিএ/এমআর