মোঃ রিফাতুন্নবী রিফাত,গাইবান্ধাঃ দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা আক্তার (১৬)। এই সুমনা মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর হওয়ার দাবি স্বজনদের। তারা জানায়, গত ২২ মে রাতে হঠাৎ করে সুমনা আক্তার ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে। এমনি এক অদ্ভূত খবর এলাকায় চাউড় হলে উৎসুক মানুষের ঢল নামতে থাকে ওই বাড়িতে। এরই মধ্যে রোববার (২৮ মে) ভোরবেলা সুমনা আক্তার ফের মেয়েতে পরিণত হয়েছে বলে জানায় সুমনা ও স্বজনরা।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের ঝারাবর্ষা গ্রামে। এই গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও লাভলী বেগম দম্পতির সন্তান সুমনা আক্তার।
স্বজনরা জানায়, সুমনা আক্তার ছোটবেলা থেকে পুরুষদের মতো অঙ্গিভঙ্গিভাবে চলেছিলো। এরই একপর্যায়ে ২২ মে রাতে প্রকৃতির খেয়ালে হঠাৎ করে সুমনার বুকের স্তন দেবে গিয়ে পুরুষের বুক ধারণ করে। একই সঙ্গে পুরুষাঙ্গও সৃষ্টি হয় তার। এই ব্যাপারটি ২৩ মে সকালে সুমনা আক্তার প্রথমে তার দাদিকে খুলে বলে। একপর্যায়ে বাবা ও মা-সহ পরিবারের অন্যান্যরাও নিশ্চিত হয়। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে দুশ্চিন্তায় পড়েন সবাই। এছাড়া ঘটনাটি গোপন রাখেন তারা।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ মে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। সুমনা আক্তার মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে- এমন খবর পেয়ে শত শত মানুষ সুমনাকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমায়। সেই সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের কানে আসা এই ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। এরপর এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় তোলপাড়। মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হওয়া সুমনাকে এক নজর দেখার জন্য অসংখ্য মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করে।
এরপর সরেজমিনে সোমবার (২৯ মে) দুপুরে ওই বাড়িতে যাওয়া হয়। এসময় সুমনা আক্তার ও পরিবারের সদস্যরা জানায়, আজ ভোরবেলা হঠাৎ করে সুমনা আক্তার আগের অবস্থায় ফিরেছে। অর্থাৎ মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত এই সুমনা এখন মেয়েই।
গত রোববার বিকেলে সুমনাকে নেয়া হয় সাঘাটার বোনারপাড়া বাজারস্থ চিকিৎসকের কাছে। এখানকার ঈসা মেডিসিন কর্ণার নামের একটি চেম্বারে বসা মেডিসিন-গাইনী ও চর্ম বিষয়ক প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ডা. মোছা. রাশেদা খাতুন প্রাথমিকভাবে সুমনা আক্তারকে নানাভাবে দেখার পর তিনি স্বজনদের বলেন, ছেলে নয় মেয়েই রেয়েছে সুমনা আক্তার।
এদিকে, সুমনা আক্তার বলে, গত ২২ মে রাতে হঠাৎ করে আমার শারিরীর অবস্থার পরিবর্তন দেখায়। এক কথায় আমি পুরুষ হয়েছি। তাৎক্ষণিক ব্যাপারটি আমার দাদী দৌলতুন্নেছাকে খুলে বলি। এরপর রোববার (২৮ মে) ভোরবেলায় ঘুমের বিছানায় থাকাবস্থায় হঠাৎ করে আমি আগের অবস্থায় ফিরেছি। অর্থাৎ আমি এখন মেয়েই আছি।
বৃদ্ধা দৌলতুন্নেছা বেওয়া বলেন, সুমনা আক্তার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। কয়েকদিন আগে সুমনা আমাকে জানায়, সে ছেলেতে পরিণত হয়েছে। এরপর আমি প্রাথমিকভাবে দেখি যে, সত্যি সে মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে। এতে আমি অবাক হই এবং বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করি। কয়েকদিন পর রোববার (২৮ মে) ভোরবেলায় আবার মেয়েতে পরিণত হয় সুমনা। এ নিয়ে তার বাবা ও মা চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। এমনকি এই এই কাণ্ডে সুমনার বাবা শহিদুল ইসলাম বাড়ি থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুজ্জামান বলেন, ব্যাপারটি লোকমুখে শুনেছি। তবে হাসপাতালে কেউ পরামর্শ নিতে আসেনি।