গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ২২০ জন, বাড়ি গেছেন ২২ জন

পিবিএ,গাইবান্ধা: করোনা ভাইরাসে গাইবান্ধায় সোমবার নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ২২ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে এখন পর্যন্ত আমেরিকা প্রবাসী দু’জনসহ তার সংস্পর্শে আসা আরও দু’জনসহ মোট ৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এর মধ্যে ৩ জন গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসন ও অপরজন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আইসোলেসনে রয়েছে। এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নতুন করে ২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের উপর কড়া নজরদাড়ি রাখা হচ্ছে। এ পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ২২০ জন ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। এরমধ্যে সদরে ৪৭, ফুলছড়িতে ৫, সুন্দর ৪৯ জন সাঘাটায় ১০, পলাশবাড়িতে ১১, গোবিন্দগঞ্জে ৪৬ ও সাদুল্যাপুর উপজেলায় ৪৩ হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। এছাড়া জেলা সদর হাসপাতালে ১ জনকে সন্দেহজনক হিসেবে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কন্ট্রোল রুম থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ জানান, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদেশ ফেরত ২২০ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মীরা করোনা ভাইরাসের সন্দেহ দেখা দিলেই সন্দেহভাজন রোগীদের রক্ত সংগ্রহ করছে এবং তা দ্রুত পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে রক্ত পরীক্ষার ফলাফল না জানা পর্যন্ত সন্দেহজনক রোগীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। তদুপরি তারা যাতে নিয়মের বাইরে না চলে সেজন্য তাদের উপর কড়া নজরদাড়ি রাখা হচ্ছে।

এদিকে সোমবার জেলা প্রশাসন থেকে এক প্রেস রিলিজে উল্লে¬¬খ করা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় জেলার প্রস্তুতি হিসেবে ৭টি সরকারি হাসপাতালে মোট ৪শ’ ৮১টি বেড রয়েছে। এরমধ্যে প্রস্তুতকৃত বেডের সংখ্যা ৩৫টি ও বেসরকারি ১৯টি। এছাড়া জেলায় মোট ১শ ২৬ জন ডাক্তার ও বেসরকারি ১৯ ডাক্তার রয়েছে। সরকারি নার্স ১শ’ ৯০ জন এবং বেসরকারি নার্স ১৯ জন।

চিকিৎসকদের জন্য ১ হাজার ৩শ’ ৩৬টি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) মজুদ রয়েছে এবং ইতোমধ্যে ৩৫টি বিতরণ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জরুরী চিকিৎসায় স্থানান্তরের নিমিত্তে ১টি এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে ও চিকিৎসা কেন্দ্রে জরুরী বিভাগে আইসোলেসনের ব্যবস্থা রয়েছে। অপরদিকে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলার সর্বত্র মাইকিং করা হচ্ছে। গণ জমায়েত পরিহার ও সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনসহ সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে জেলায় টহল প্রদান করা হচ্ছে।

জেলায় সরকারি সহায়তা হিসেবে পূর্বের মজুদকৃত ১৯৫ মে. টন চাল ও ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকার সাথে করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবেলায় আরও ২শ’ মে. টন চাল এবং ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ১১৮ মে. টন চাল ও ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ৪টি পৌরসভার মেয়র বরাবরে উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে ২শ’ ৭৭ মে. টন চাল ও ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে। এছাড়া সদর, সুন্দরগঞ্জ ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা এবং গাইবান্ধা পৌরসভায় ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩শ’ ১৮টি পরিবারের মধ্যে ১৩.১৮০ মে. টন চাল ও নগদ ৫৫ হাজার ৯শ’ টাকা দিয়ে বরাদ্দকৃত চালের সাথে ডাল, আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দিয়ে প্যাকেট প্রস্তুত করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে।

পিবিএ/স্বজন ইসলাম/বিএইচ

আরও পড়ুন...