রাজন্য রুহানি,জামালপুর: পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে জামালপুর পৌর শহরের ইদিলপুর মৌজার ডাকপাড়া এলাকায় হাজী খুর্শিদা রহমানের পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ভুক্তভোগী পরিবার।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রেসক্লাব জামালপুর মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জামালপুর পৌর শহরের ফুলবাড়িয়া পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার মৃত এসএম তৈহাজী খুশিদা রহমান ও তার ছেলে এস এম মোরশেদ আলম সংবাদ সম্মেলনে জমি দখলের অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান রংপুর রেঞ্জের দায়িত্ব পালন করছেন ও তিনি মেলান্দহ উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের গুজামানিকা গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাজী খুশিদা রহমান বলেন, ‘আমার স্বামী এস এম তৈয়বুর রহমান ও তার ছোট ভাই আব্দুল জব্বার ডাকপাড়া এলাকায় ১৬৮ শতাংশ জমি আরওআর রেকর্ডীয় মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করেন। সেই জমি বিআরএস রেকর্ডে কিছু অংশ তাদের অপর এক ভাইয়ের নামে রেকর্ড হয়। পরে আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করা হয়। সেই জমি দুই ভাই পূর্ণাঙ্গ মালিকানা পান। পরে রাস্তা ও গ্যাসের লাইনের জন্য সরকারীভাবে ৬১ শতাংশ জমি অধিগ্রহন করা হয়। ওই পুলিশ কর্মকর্তার শ্বশুর একক স্বাক্ষরে সেই অধিগ্রহনের টাকা উত্তোলন করেন। সেই হিসাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তার শ্বশুরের ২৩ শতাংশ জমি অবশিষ্ট থাকে। এর কিছুদিন পরে তিনি মারা যান। আর তার ছেলে সন্তান না থাকায় অবশিষ্ট ২৩ শতাংশ জমি মৃত আব্দুল জব্বারের মেয়ে ডিআইজি মো. মিজানুর রহমানের স্ত্রী নাসরিন দেবা সুমি, ভাই, ভাতিজা ও বোনেরা ওয়ারিশ হয়। কিন্তু ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী ২০১৬ সালে স্বামীর দাপটে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তাদের জমিসহ আমাদের ৮৪ শতাংশ জমি ও দোকানপাট জোর পূর্বক দখল করেন।
খুর্শিদা রহমানের ছেলে এস এম মোরশেদ আলম বলেন, ‘ডিআইজি মিজানুর রহমান পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় তার নির্দেশে পুলিশ সাথে নিয়ে জমি দখল করে। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের থানায় তুলে নিয়ে যায়। হামলা-মামলার হুমকি দেন, অপমান-অপদস্ত ও গালি গালাজ করেন। আমাদের দেখলেই ভয়ভীতি দেখান। সেই সময়ের আওয়ামী লীগের নেতারা ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। এতোদিন ভয়ে আমরা কিছু করতে পারিনি। এখন সরকার পতনের পরও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। জীবনের ভয়ে আছি। পুলিশ কর্মকর্তার হাত আমরা আমাদের জমি ফেরত চাই।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, ‘আমি যতদিন যাবত সদর থানায় আছি। এ সময়ের মধ্যে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আগে যদি ঘটে থাকে, আর কেউ অভিযোগ করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থাগ্রহন করবো।’
এ প্রসঙ্গে রংপুর রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো.মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটা আমার শ্বশুরের পৈত্রিক সম্পত্তি। তারা যে অভিযোগ করেছে সেটা অবান্তর। আপনারা খোঁজখবর নিয়ে দেখতে পারেন।’