
আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো সেটাই। পরিত্যক্ত হয়েছে বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে। যার ফলে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ডময় সেঞ্চুরির ম্যাচে পূর্ণ আনন্দের স্বাদ পেল না টাইগাররা।
এ যেন এক রেকর্ডময় ম্যাচ! দলীয় ও ব্যক্তিগত দুই দিকেই একেরপর এক মাইলফলক স্পর্শ করা আর নতুন রেকর্ড গড়া, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ এটাই ছিল বাংলাদেশের ইনিংসের সারমর্ম।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ৩৪৯ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। টাইগারদের ইনিংস শেষেই নামে বৃষ্টির ধারা। যার ফলে বন্ধ হয় খেলা।
একটি ওয়ানডে ম্যাচে ফলাফল আনতে কমপক্ষে ২০ ওভার খেলতে হয়। সিলেটে বৃষ্টি বাগড়া দেয়ার পর কাট-অফ টাইম নিশ্চিত করা হয় রাত ৯টা ৩৩ মিনিট। এই সময়ের মধ্যে খেলা শুরু করা গেলে ২০ ওভারে আয়ারল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়াতো ১৮৫ রান।
তবে কাট অফ টাইমের এক ঘণ্টা আগেও বৃষ্টি না থামলে স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩২ মিনিটে ম্যাচ অফিসিয়ালরা খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।
এর আগে সোমবার টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে নামেন লিটন দাস।
ম্যাচের শুরুতে টাইগারদের চেপে ধরে আইরিশ পেসাররা। প্রথম সাত ওভারে মাত্র ১৮ রান যোগ করতে পারেন তামিম ও লিটন। অষ্টম ওভারে গ্রাহাম হিউমের উপর চড়াও হয়ে চাপ কমান লিটন। একটি করে চার ও ছয়ের মারে সেই ওভারে আসে ১২ রান।
প্রথম পাওয়ার প্লে মোটামুটি নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দিচ্ছিলেন দুই টাইগার ওপেনার। তবে শেষ বলে বাধে বিপত্তি। রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন ২৩ রান করা তামিম। তার বিদায়ের পর খোলস ছেড়ে বের হন লিটন, শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ।
সেই ধারাবাহিকতায় ৫৪ বলে ম্যাথু হামফ্রেসকে ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধশতক পূরণ করেন লিটন। একইসঙ্গে স্পর্শ করেন ওয়ানডেতে ২০০০ রানের মাইলফলক। বড় কিছুর স্বপ্ন দেখালেও ৭০ রানে আউট হন তিনি।
অন্যপ্রান্তে শান্তও পান ফিফটির দেখা। সাজঘরে ফেরার আগে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলেন তিনি, করেন ৭৩ রান। তবে এদিন ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন সাকিব আল হাসান। মাত্র ১৭ রান করেন এ অলরাউন্ডার।
এরপর দলকে এগিয়ে নেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়। দুজনের ১২৮ রানের জুটিতে ঝড়ের গতিতে সচল থাকে স্কোরবোর্ডের চাকা। ফিফটির পথে থাকলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৪৯ রানে হৃদয় ফিরলে ভাঙে এ জুটি।
সবাইকে ছাপিয়ে আইরিশ বোলারদের সবচেয়ে বেশি নাস্তানাবুদ করেছন মুশফিকুর রহিম। মাত্র ৩৩ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। ফিফটির পরই কার্টিস ক্যাম্ফারকে মিড উইকেট দিয়ে সীমানাছাড়া করার মাধ্যমে ওয়ানডেতে ৭০০০ রান পূরণ করেন এ ব্যাটার।
ফিফটি করেই থামেননি মুশফিক। একেরপর এক বল বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলতে থাকেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ৬০ বলে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান তিনি। যা বাংলাদেশিদের মাঝে দ্রুততম।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে গ্রাহাম হিউম তিনটি এবং মার্ক আদাইর ও কার্টিস ক্যাম্ফার একটি করে উইকেট শিকার করেন। বর্তমানে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।