গণশুনানি না করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
জ্বালানি সচিব, জ্বালানি উপসচিব ও বিইআরসির চেয়ারম্যানকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে এ সংক্রান্ত রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
আদালতে শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, সরকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইনের বিধান লঙ্ঘন করেছে। কারণ আইনে আছে গণশুনানি করতে হবে, তারপর দাম বৃদ্ধি করতে পারবে বিইআরসি। এখানে দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গণশুনানি হয়নি। দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির একমাত্র এখতিয়ার বিইআরসির।
রিটের পক্ষে থাকা আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া আদালতে বলেন, গণশুনানি ছাড়া দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেই। এখানে মন্ত্রণালয়ের দাম নির্ধারণ করার এখতিয়ার নেই। মন্ত্রণালয় দাম বৃদ্ধি করে বিইআরসির ক্ষমতা খর্ব করেছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের বিধি অনুমোদিত হয়নি। যে কারণে আইনের বিধান অনুসারে কমিশনের এখানে গণশুনানির সুযোগ নেই। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। সরকারের সিদ্ধান্তে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে। শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেন।
এর আগে গত ৮ আগস্ট জ্বালানি তেল ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দাম বৃদ্ধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে তেলের দাম বৃদ্ধি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা গেজেট স্থগিত, বাতিল ও প্রত্যাহার চাওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন। জ্বালানি সচিব, জ্বালানি উপ সচিব ও বিইআরসির চেয়ারম্যানকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
ডলার সংকট এবং বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে গত ৫ আগস্ট রাতে দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য (১ লিটার) ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোল ১৩০ টাকা হবে।