পিবিএ,সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় রাজধানী ঢাকা থেকে পালিয়ে আসা এক করোনা আক্রান্ত রোগীকে খুঁজে বের করেছে পুলিশ। কিন্তু তাকে খুঁজে বের করতে গিয়ে অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে পুলিশকে। রোগী বার বার স্থান বদল করায় পুলিশ ব্যাপক হয়রানীর শিকার হয়। দীর্ঘ ৬ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার(১৩ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নিদের্শনায় দেবহাটা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের মহাজনপুরের একটি বিল থেকে করোনা আক্রান্ত ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) থেকে জানানো হয় করোনা আক্রান্ত একজন রোগী ঢাকা থেকে পালিয়ে সাতক্ষীরায় এসেছে। তার অবস্থান আশাশুনির কোথাও।
মোবাইল ফোন ট্র্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। একটি ফোন নম্বর ও বাড়ির হোল্ডিং নম্বর দেয়া হয়েছিলো। তবে সেই বাড়িতে গিয়ে আমরা বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় পায়। পরে আশাশুনি থানা এলাকায় ৬ টি বাড়ি এবং কয়েক কিলোমিটার এলাকায় তিনি পালিয়ে বেড়িয়েছেন। মৃত আত্নীয়ের বাড়িতেও গিয়েছেন। দীর্ঘ ৬ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজধানী ঢাকা থেকে পালিয়ে আসা ঐ করোনা আক্রান্ত নারীর বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায়। কিন্তু তাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ তাকে খুঁজে পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্টাটাস দেয়। মুহূর্তেই সেটি ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ সচেতন হয়ে খুজতে থাকে। পুলিশ এক পর্যায়ে জানতে পারে আশাশুনির কুল্যা ইউনিয়নের জনৈক সাঈদ ঢালীর বাড়ির বাড়িতে অবস্থান করছেন করোনা আক্রান্ত ওই নারী।
কিন্তু সেখানে তাকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান ওই রোগী। এতে পালাতে সহযোগিতা করার অভিযোগ ওঠে সাঈদ ঢালীর বিরুদ্ধে। পুলিশ এসময় সাঈদ ঢালীর বাড়ি লকডাউন করে দেয়। এরপর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সকল থানাকে এলার্ড করা হয়। মাঠে নামে পুলিশের বিভিন্ন টিম। শেষ পর্যন্ত পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রমে অবশেষে তাকে পাওয়া যায় মহাজনপুরের বিলে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খুজে বের করায় পুলিশের সকল অকুতোভয় সদস্যকে অশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
পুলিশ সুপার বলেন, জেলা পুলিশ সবসময় সাতক্ষীরাবাসির সেবায় নিয়োজিত। এরআগে ফেসবুক স্টাটাসে পুলিশ সুপার দু:খ প্রকাশ করে বলেন, সাঈদ ঢালী, কুল্যা ইউনিয়ন, তার আত্মীয় যিনি করোনা রোগীকে আবার বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। তার বাড়ি লকডাউন করে রোগীকে আশে পাশের জনগণের সহায়তায় খোঁজা হয়।
রোগী একজন মহিলা, পুলিশ দেখে এ বাড়ি সে বাড়ি পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সবার সহযোগিতা কাম্য। আশাশুনি থানার সকল ফোর্স অফিসার মিলে তাকে খুঁজছে। পুলিশকে ফাঁকি দিতে এভাবে পালিয়ে বেড়ানো দুঃখজনক। কেউ আতংকিত হবেন না, আমরা তাকে খুঁজে বের করবো। রোগীকে পালিয়ে যেতে দেয়া সাঈদ ঢালীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিবিএ/হাবিবুল হাসান/বিএইচ