নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করায় হত্যা: র‍্যাব

পিবিএ,ঢাকা: রাজশাহীতে নির্ধারিত মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় ভিকটিম মামুন হোসেনের হত্যাকারী মিজানুর রহমান ওরফে খোকনকে মাদারীপুর হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গত ২০ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক ১০০০ ঘটিকায় রাজশাহীর বাঘা থানার আড়ানী হাটে ন্যায্য মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় একজন মাংস ব্যবসায়ীকে দেশিয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে অপর একজন মাংস ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভিকটিমের ছোট ভাই বাদী হয়ে রাজশাহীর বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন; যার মামলা নং-১৪/১৪ তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২৪। উক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে র‌্যাব।

গত রাতে র‌্যাব-৫ ও র‌্যাব-৮ এর আভিযানিক দল মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাংস ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি মোঃ মিজানুর রহমান ওরফে খোকন (৩৫)-কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত খোকন উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম মামুন গ্রেফতারকৃত খোকনের নিকট আত্মীয়। তারা রাজশাহীর বাঘা থানার আড়ানি বাজারে একত্রে গরুর মাংস বিক্রির ব্যবসা করতো। সাম্প্রতিক সময়ে ভোক্তা অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিত বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পরবর্তীতে ভোক্তা অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত খোকন ও ভিকটিম মামুনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে গত বছর শেষের দিকে ভিকটিম মামুন ভোক্তা অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আলাদাভাবে মাংস বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। ফলে ভিকটিম মামুনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং গ্রেফতারকৃত খোকনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমাণ কমে যায়।

নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করা নিয়ে ঘটনার দিন তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাকবিতন্ডের সৃষ্টি হলে গ্রেফতারকৃত খোকন উত্তেজিত হয়ে মাংস কাটার ছুরি দিয়ে ভিকটিম মামুনকে প্রকাশ্যে পেটে ও বুকের ডান পাশে উপর্যুপরি আঘাত করে ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃত খোকন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে প্রথমে রাজশাহীর তাহিরপুরে তার এক আত্মীয় বাড়িতে অবস্থান করে। পরবর্তীতে মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় স্থায়ীভাবে আত্মগোপনের লক্ষ্যে তার পূর্ব পরিচিত এক বন্ধুর মাধ্যমে সেখানে ড্রেজার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকে। মাদারীপুরের শিবচর এালাকায় আত্মগোপনে থাকাকালীন অবস্থায় র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়।

গ্রেফতারকৃত খোকন মাংস ব্যবসার পাশাপাশি মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত খোকনের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বাঘা থানায় মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে ০৪টি মামলা রয়েছে এবং এসকল মামলায় সে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুন...