“নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অফিসকাজ শেষ করার নির্দেশ”

নতুন নিয়মের প্রথমদিন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সময় কমিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সময়মতো অফিসে চলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। নতুন অফিস সময়ের কারণে কোনো কাজ জমে থাকবে না এবং সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না বলেও জানান তিনি।

বুধবার (২৪ আগস্ট) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বিএসআরএফ গ্রুপ বীমা চুক্তি অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বুধবার থেকে সময় কমিয়ে নতুন নিয়মে অফিস করছেন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সরকারি অফিস চলছে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে চমৎকার সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপন দিয়ে অফিস সময় এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস ছিল, আমরা অফিসের সময় এক ঘণ্টা কমিয়ে এনেছি। এক ঘণ্টা আগে অফিস বন্ধ করতে পারলেও আমরা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারব।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে বিদ্যুতের উৎপাদন সেটাকে আমরা ম্যানেজ করে নিতে চাই। অফিসকে এগিয়ে নিতে আমাদের পক্ষে এটা সম্ভব। আজকে থেকে আমরা নতুন অফিস টাইম শুরু করেছি। আমরা এক ঘণ্টা এগিয়ে সকাল ৮টা থেকে অফিস। আমরা বলেছিলাম, ইনশাআল্লাহ কোনো সমস্যা হবে না।

‘আমরা দেখলাম স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের সরকারি কর্মচারীরা সকলে কিন্তু এক ঘণ্টা আগে সঠিক সময়ে অফিসে এসেছেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমরা এ কাজটা করতে পারছি। আমরা আশা করি সুন্দরভাবে সরকারের নতুন অফিসের সময়সূচি মেনে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের যে বিষয়টি সেখানে সবাই সহযোগিতা করছেন এবং আমরা সুন্দরভাবে এটা অ্যাডজাস্টমেন্ট করে নিতে পারব।’

তিনি বলেন, আমাদের এ সময়সূচিটা যথেষ্ট ভালো হয়েছে, সেটি আমরা দেখছি। সবার উপস্থিতি সেটিও আমরা লক্ষ্য করছি।

শীতকালেও এ অফিসসূচি বহাল থাকবে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি আপাতত এটা করেছি পরবর্তী প্রজ্ঞাপন না দেওয়া পর্যন্ত। এখন দিনের সময়টা অনেক বড়। আমরা আলোটা পাচ্ছি অনেক আগে, সেক্ষেত্রে আমরা লাইটটাকে ব্যবহার করতে চাই। আপাতত আমাদের সেচ ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও এটি লাগবে। এটা পরে আবার আমরা অ্যাডজাস্টমেন্ট করবো।

এক প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ হোসেন বলেন, বলা হয়েছিল সকালে স্কুল আছে, সেক্ষেত্রে অফিসের নতুন সূচি কনফ্লিক্ট করবে কিনা? এক্ষেত্রে আমরা চিন্তা করেছিলাম, আগে আমরা দেখি, এটা কনফ্লিক্ট করে কিনা। কারণ আমাদের বেসরকারি অফিস কিন্তু ৯টা থেকে আগের সময়েই। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৯টা থেকে। তবে আজকে আমরা যে পরিস্থিতি লক্ষ্য করেছি এটি সহনীয় ও সরকারি সিদ্ধান্তটি সঠিক আছে। এখানে কোন সমস্যা নেই।

নতুন অফিস সূচি কাজের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে কিনা- এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বা এপিএ রয়েছে। সারা বছর আমরা কী কাজ করবো তা নির্ধারিত থাকে। আমরা সরকারি সেবাটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেব, সেজন্য দরকার আন্তরিকতা। আমরা সব অফিস প্রধানকে নির্দেশনা দিচ্ছি, এ অল্প সময়ের মধ্যে তড়িৎ গতিতে স্মার্টলি আমাদের কাজগুলো করতে হবে।

ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, সাধারণত নামাজ ও খাবারের জন্য আমরা আধাঘণ্টা সময় দিয়ে থাকি। যেহেতু আমরা এক ঘণ্টা সময় এগিয়ে নিয়েছি তারা যদি একটায় খেতে যায় দেড়টার মধ্যে নামাজটা শেষ করে নেয়। তাহলে সে ৮টা থেকে একটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ৫ ঘণ্টা কাজ করতে পারবে। আধঘণ্টা বিরতি নেয় বাকি কাজগুলো করবে। আমরা দুঘণ্টা আগে বাসায় ফিরতে পারছি। এটা আমাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা।

তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয় না কোনো কাজ পেন্ডিং থাকবে এবং সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না।

অনুষ্ঠানে সানলাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির পক্ষে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) শাহাদাত হোসেন সোহাগ এবং বিএসআরএফয়ের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক চুক্তিতে সাক্ষর করেন। চুক্তির আওতায় বিএসআরএফ সদস্যরা গ্রুপ বীমার সুবিধা পাবেন। এ সময় বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন...