পিবিএ,ইন্দুরকানী: সারা দেশের মানুষ যখন করোনা নির্মুলে নিজেকে নিরাপদে রাখার জন্য ঘরের বাহির হচ্ছেন না তখন পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রশাসনের সচেতনামুলক নির্দেশনা উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে দোকানপাট খোলা রাখা সহ জনসাধারনের মধ্যে বিরাজ করছে যেন ঈদের আমেজ। এ উপজেলা হাটবাজার গুলোতে জনসাধারনের সমাগম আগের মত রয়ে গেছে বরং এলাকার বাহির থেকে যেমন ঢাকা-চিটাগং সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লম্বা ছুটিতে বেড়াতে আসা লোক গুলো জমাচ্ছে বারতি ভির। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকায় ব্যাবসায়ী আর সাধারন জনগণ সচেতনতার বিষয়টি গায়ে লাগাচ্ছেনা বলে অভিযোগ সচেতন মহলের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পাড়েরহাট, ইন্দুরকানী, বালিপাড়া, চন্ডিপুর হাট, জোমাদ্দারহাট, ঘোষেরহাট, বটতলা বাজার, পত্তাশী, পথেরহাট, বাগলেরহাট, লাউরী ও বৌডুবি বাজারে লোক সমাগমের চিত্র একই রকম। এসব হাট বাজারের সবধরনের অধিকাংশ দোকানপাট খোলা রাখছে ব্যবসায়ীরা। সকালে স্থানীয় হাট বাজার গুলোতে লোকজন কিছুটা কম হলেও বিকালে মেলে ঈদের আমেজ। শুক্রবারও সকাল ও বিকালে ইন্দুরকানী ও বালিপাড়া বাজারে এ চিত্র দেখা গেছে। কেউ কেউ প্রশাসনের টহলের খবর রেখে এবং আবার কেউ দোকানের অর্ধেক সাঁটার খোলা রেখে কৌশলে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখছেন। উপজেলা প্রশাসন সহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত মাইকিং করে সবাইকে সচেতন হওয়ার জানান দিলেও এসবের কোন তোয়াক্কা করছেননা অনেকেই। তাছাড়া জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে ঘোরাফেরা না করার অনুরোধ জানানো হলেও বাস্তবে তা কোন কাজে আসছেনা। রাস্তাঘাটে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এবং একসাথে দলবেঁধে চলাচলের ব্যাপারে নিষেধাঞ্জা থাকলেও অনেক যুবক ও কিশোররা এ নিয়ম মানছেননা। সাপ্তাহিক হাট বাজার গুলোতে হাটের ব্যাপারে করোনার উল্লেখযোগ্য ভাবে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি এখানে। হোটেল আর চায়ের দোকান গুলোতে সবসময় লোকজনের সমাগম বেশি থাকার কারনে এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে নিষেধাঞ্জা আরোপ করার পরও অধিকাংশ হোটেল-চায়ের দোকান খোলা থাকায় লোকজনের আড্ডা বাড়ছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টানা দশ দিনের সাধারন ছুটির কবলে পড়ায় এবং দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের অনেকেই ঢাকা সহ বিভিন্ন শহর ছেড়ে গ্রামে আসতে শুরু করেছেন। তারাও অনায়াসেই রাস্তা ঘাটে কিংবা হাটবাজারে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার বিষয়টি এখানে অনেকের মধ্যে মুখে শুধু আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ। যদিও এ উপজেলাটি এখন পর্যন্ত লকডাউন করার মত অবস্থা তৈরী হয়নি তথাপিও বিদেশ ফেরতসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজনের দ্বারা করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝূঁকি থাকায় জনসমাগম বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।
এ ব্যাপারে বালিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে সচেতন করতে এবং জরুরী প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে হাটবাজার বা রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা না করার জন্য মাইকিং করাচ্ছি এবং আমি নিজে হাট বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের জনসমাগম সৃস্টি না করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।
ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুসাইন মোহাম্মদ আল-মুজাহিদ জানান, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মিলে সার্বিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। গণজমায়েত না করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে এবং যারা বিদেশ থেকে বাড়িতে আসছে তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা সহ নিয়মিত আমরা মনিটরিং করছি। তবে এব্যাপারে যার যার সেইভটির জন্য নিজে থেকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ এ কর্মকর্তার।
পিবিএ/সিরাজুল ইসলাম টিটু/এএম