
মোঃ আহাদ মিয়া,মৌলভীবাজার: বাদক মদিনার বাঁশের বাঁশির সুর ও গানের টানে লাউয়াছড়া ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হয়ে যান। দেহতত্ত্ব, বাউল, মুর্শিদি, আধুনিক ও আঞ্চলিক ভাষায় বাঁশের বাঁশি দিয়ে আবার কখনো খালি কন্ঠে গান গেয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ভ্রমণে আসা আগত দর্শনার্থীদের আনন্দ দিয়ে থাকেন। ৪ সন্তানের জনক ৫৬ বছর বয়সী বাউল মদিনা বাঁশি বাজিয়ে ও গান গাইয়ে দর্শনার্থীদের আনন্দ দিয়ে যা বকসিস(টিপস) পান তা দিয়েই চলে তার অভাবের সংসার। বাউল মদিনার আদি নিবাস বি-বাড়িয়া জেলায় হলেও শিশুকালে মা বাবা সাথে চলে আসেন মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামে। সেখানে প্রকৃতির সংলগ্ন টিলার উপরের বসতবাড়িতে কাটে তার শৈশব
কৈশোর।
বাউল মদিনার সাথে আলাপকালে জানা যায়, তার প্রয়াত দাদার কাছ থেকেই বাঁশি বাজানো ও গান শিখেছেন। বাঁশের বাঁশি ও গানের পিছনে ছুটে লেখাপড়া হয়নি। বর্তমানে পেশা হিসাবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ফেরি করে আইসক্রিম ও বাদাম বিক্রি করেন, তবে সংক্রমন করোনা ভাইরাসের কারনে ২০২০ ও ২০২১ সালের লকডাউনে কর্মস্হল লাউয়াছড়া সাময়িক বন্ধ হয়ে গেলে, পর্যটক শূন্য হয়ে যায় উদ্যানটি বন্ধ হয়ে যায় বাদাম বিক্রি, শুরু হয় অভাবের সংসারে টানাটানি বাধ্য হয়ে ৫৬ বছর বয়সে ধরেন রিকসার হেন্ডেল।
মহামারী করোনায় খেয়ে না খেয়ে কোন রকম বেঁচে ছিলেন। এরমধ্যে হঠাৎ লকডাউন শিথিল করা হলে আবারো ছুটে যান চিরচেনা সেই কর্মস্হল লাউয়াছড়ায়। সুর তুলেন বাঁশের বাঁশিতে, ছুটে আসেন পর্যটক। বাঁশির সুরের সঙ্গে হাতের তালি দিয়ে কোন ধরনের বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই খালি গলায় সুর তুলেন বাউল মদিনা। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় প্রায়ই বাউল মদিনাকে দেখি। তিনি নিজের মতো করে আপন সুরে বাঁশি বাজান ও গান গান। মানুষ খুশি হয়ে কিছু দিলে সে(মদিনা) সাদরে গ্রহণ করে। পর্যটকদের বিরক্ত করে কিংবা কারও কাছ থেকে জোরপূর্বক কোনো টাকা আদায় করতে দেখা যায়নি।