মহিউদ্দিন আল আজাদ,চাঁদপুর প্রতিনিধি: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছেলে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে হত্যাকাণ্ডের শিকার আকতার হোসেনের (৫৮) মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এর আগে বুধবার রাতে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড টোরাগড় গ্রামের সরকার বাড়ীতে বাবাকে কুপিয়ে ছেলে সাকিব হোসেন (২৫) পালিয়ে যায়। তিনি ওই বাড়ির মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে।
নিহতের স্ত্রী তাছলিমা বেগম বলেন, আমাদের পরিবারের সদস্য আটজন। এর মধ্যে ছেলে সাকিব ও তার স্ত্রী হোসনেআরা আক্তার ফারহানা রয়েছে। ছেলে সপ্তাহে সংসার খরচ এক হাজার টাকা দেয়। এ নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) তাকে বকা দেয় তার বাবা। এ সময় দুইজনের মাঝে তর্কবিতর্ক হয়। ওই সময়ে সাকিব চার্জার লাইট ছুড়ে মারলে আমার শাশুড়ির (ছেলের দাদি) কপালে গিয়ে পড়ে। পরে আমিও তাকে বকাঝকা করি।
তিনি বলেন, আমার বকাঝকা পর ছেলে শান্ত হয়। এরপর থেকে আর কোনো ঝামেলা নেই। এরমধ্যে আমার বউ (সাকিবের স্ত্রী ফারহানা) তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। তারপর থেকে ছেলে বাড়িতে থাকে আবার শশুর বাড়িতেও যায়। গতকাল (বুধবার) রাতে আমার নিকট আত্মীয়কে দেখতে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ একটি হাসপাতালে যাই। রাত সাড়ে বারোটার দিকে মেয়ে আমাকে ফোন করে জানায় সাকিব তার বাবাকে ঘাই (কোপ) দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে আমি আলীগঞ্জ হাসপাতালে (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) যাই। সেখান থেকে কুমিল্লা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই ঘটনায় আমার ছেলের বউ (ফারহানা) জড়িত। সে আমার ছেলের মাথা খারাপ করে পেলেছে। স্বামী হত্যায় ঘটনায় আমার ছেলে ও বউয়ের বিচার চাই।
তিনি বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় বাবা-ছেলের ঝগড়া হয়। পরে শান্ত হলে আমি আমার আত্মীয়কে দেখতে বাজারস্থ একটি হাসপাতালে যাই। পরে শুনি এ অবস্থায়। কি দিয়ে বুকের দুই পাশে ঘাই (কোপ) দিয়েছে জানিনা। তখন শাশুড়ি, আমার ছেলে ও মেয়েরা ঘুমিয়ে ছিলো। স্বামীর চিৎকার শুনে তারা ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখে সাকিব ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। পরে তারা তাদের বাবাকে (আকতার হোসেন) নিয়ে হাসপাতাল চলে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. গোলাম মাওলা নঈম জানান, আহত আকতার হোসেনের শারিরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লায় রেপার করা হয়। পরে শুনেছি কুমিল্লা নেওয়ার পথে তিনি এ্যাম্বুলেন্সে মারা যান।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধারপূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় তিনি জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড।