পিবিএ স্পোর্টস ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় সে দেশে সফররত বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেছেন এখন থেকে যথেষ্ট নিরাপত্তা না পেলে কোথাও খেলতে যাবে না বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস পেলেই খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল।
আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) গুলশানে নিজ বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের এবং বোর্ডের পক্ষ থেকে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
নাজমুল হাসান পাপন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এখনও আতঙ্কিত বাংলাদেশ। এমন ঘটনার মুখোমুখি আগে কখনও হননি ক্রিকেটাররা। তবে এই একটি ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতায় প্রশ্ন উঠেছে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে।
তিনি জানান, এখন থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার আশ্বাস পেলেই বাংলাদেশ দল কোথাও সফরে যাবে।
পাপন বলেন, কোনও টুর্নামেন্ট খেলতে কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নিতে বিদেশি কোনও দল বাংলাদেশ সফরে এলে নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে টিম হোটেল, টিম হোটেল থেকে ভেন্যু এবং ভেন্যু থেকে টিম হোটেল- পুরো পথই নিরপত্তার চাদরে ঢাকা থাকে। এমনকি বিদেশি খেলোয়াড়রা মাঠের বাইরে কোথাও বেড়াতে গেলে সেখানেও থাকে এই ব্যবস্থা।
কিন্তু বাংলাদেশ কোথাও গেলে শক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চোখে পড়ে না কিংবা কোনও কোনও ক্ষেত্রে নিরাপত্তাই দেওয়া হয় না ক্রিকেটারদের জন্য। সেটা যে কতটা সত্য, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর।
শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। কিন্তু ততক্ষণে মসজিদে ঘটে গেছে রক্তক্ষয়ী ঘটনা। টিম বাস মসজিদের সামনে পৌঁছানোর পর এক অচেনা নারী সতর্ক করেন ক্রিকেটারদের। অথচ সেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য কোনও ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। শুধু কি নিরাপত্তারক্ষী, কোনও টিমের লিঁয়াজো অফিসারও ছিল না। এমন নিরপত্তাহীন অবস্থায় ক্রাইস্টচার্চে কঠিন বিপদের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ৫ মিনিটের হেরফের হলেই ভয়ানক পরিস্থিতির শিকার হতেন তারা।
এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। ভবিষ্যতে নিজেরা যথেষ্ট নিরাপত্তা না পেলে বিদেশ সফরে বিরত থাকবেন বলে জানান তিনি, ‘আমাদের দেশে কোনও বিদেশি দল যখন আসে, তখন তারা যে ধরনের নিরাপত্তা নিয়ে কথাবার্তা বলে আর যে ধরনের নিরাপত্তা আমাদেরকে দিতে হয় সেটা নিয়ে আমরা জোরাজুরি করিনি। অন্য দেশও কেউ করে না দেখেছি। এসব দেশে যারা খেলতে যায়, কেউ করে না। আসলে আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে এরকম কোনও ধারণাই নিউজিল্যান্ডের নেই।’
তবে এবার পরিস্থিতি পাল্টে যাবে মনে করেন বোর্ড প্রধান, ‘এখন হয়তো এ ব্যাপারে সতর্ক হবে তারা। তবে অন্যরা কী করে জানি না, আজকের ঘটনার পরে এটা নিশ্চিত যে এখন থেকে যে দেশেই বাংলাদেশ যাক না কেন, আমাদের ন্যুনতম চাওয়া অনুযায়ী নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা যারা দিতে পারবে, তাদের ওখানেই আমরা খেলতে যাব। এছাড়া খেলতে যাওয়া সম্ভব না।’
এ ঘটনার পর নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা যায় কিনা চিন্তা করছে বিসিবি, ‘আজকের এই ঘটনার পর সব বদলে যাবে। এখন থেকে এ ব্যাপারে আমাদের ভাবতে হবে। যদি প্রয়োজন হয়, অবশ্যই আমরা নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’