ভাইরাল হওয়ার পর সেই ছাত্রীর মোবাইল জব্দ করল পুলিশ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তারের (২৫) ছিনতাই হওয়া মোবাইল জব্দ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় মূল অভিযুক্তসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন রাশেদুল ইসলাম (১৭) ও মূল অভিযুক্ত মো. রিপন ওরফে আকাশ।

বুধবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর তেজগাঁও থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রুবাইয়াত জামান।

যেভাবে জব্দ করা হয় মোবাইলটি

অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রুবাইয়াত জামান বলেন, গত ২১ জুলাই মাস্টার্সের থিসিসের কাজ শেষে বাসযোগে নিজ বাসায় ফিরছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার (২৫)। তেজগাঁও থানাধীন কারওয়ান বাজারস্থ ওয়াসা ভবনের সামনে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ট্রাফিক সিগন্যালে থেমে যায় বাসটি। এ সময় বাসের জানালা থেকে অভিযোগকারী পারিশার হাত থেকে তার ব্যবহৃত পোকো এম থ্রি কালো রঙ এর মোবাইল ফোনটি টান দিয়ে চুরি করে নিয়ে যায় জনৈক অপরাধী। অভিযোগকারী এ সময় দ্রুত বাস থেকে নেমে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ১ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরে ফেলতে সক্ষম হন। পারিশার সাথে থাকা তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল থেকে অপর একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন। সন্দেভাজন ব্যক্তি বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকলেও, পারিশার মোবাইল চুরির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এডিসি রুবাইয়াত জামান বলেন, ঘটনার পর প্রথমে তেজগাঁও থানায় একটি জিডি লিপিবদ্ধ করেন পারিশা আক্তার। পরবর্তীতে আইনী বিষয় ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতে পুলিশের অনুরোধে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং অপরাধীর বিষয়ে অভিযোগকারীর মৌখিক বর্ণনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রাশেদুল ইসলাম (১৭) কে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে ঘটনার সাথে নিজের ও মূল অভিযুক্ত মো. রিপন ওরফে আকাশ (২৪) কে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে।

গ্রেফতারের পর যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়
পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যে অন্য মামলায় গ্রেফতার হওয়া মো. রিপন আকাশ (২৪) কে জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ড চাওয়া হলে বিজ্ঞ আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে এবং চুরি করা মোবাইল ফোনটি মাত্র ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে কারওয়ান বাজারের চোরাই মোবাইল ক্রেতা মো. শফিকের (২১) কাছে বিক্রয় করেছে বলে জানায়। অভিযুক্তের বক্তব্য অনুযায়ী, কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় শফিককে এবং তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় চোরাই মোবাইলটি।

অভিযুক্ত মো. রিপন ওরফে আকাশের নামে বিভিন্ন থানায় ৬ টি মামলা, আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু রাশেদের বিরুদ্ধে ৪ টি মামলা এবং চোরাই মোবাইল ক্রেতা শফিকের নামে ২ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তেজগাঁও থানা পুলিশও বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনাপূর্বক অপরাধ দমন ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করেছে।

মামলা রুজু হবার ১০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ আজ মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষে উল্লিখিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন...