পিবিএ,ঢাকা: প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভোগান্তির শেষ নেই ট্রেনের টিকিট কিনতে । রেল মন্ত্রীর আন্তরিকতা কতটুকু যাত্রীরা জানেননা । ট্রেনের যাত্রীরা ভেবেছিল এবার হয়তো সবকিছু সহজেই পার পাওয়া যাবে । কিন্তু তাহয়ে ওঠেনি । রেল মন্ত্রীর কথা তার অধিনস্ত কেউ শোনেনি । বরং ফল হচ্ছে তার উল্টো । বলতে গেলে ভোগান্তি আগে যেমন ছিল এখনও তাই আছে।
এমনকি কমলাপুর স্টেশনে র্যাবের অভিযানের পরও কোন উন্নতি হয়নি । বাংলাদেশ রেলওয়ের চালু করা অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কেনা যাচ্ছে না । তাই যাত্রীদের টিকিট কিনতে ভোরে এসে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। কিন্তু লাইনে দাঁড়িয়েও ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ। লাইন এগোচ্ছে না ঠিকঠাক। অর্থাৎ এখানেও টিকিট মিলছেনা । তাহলে টিকিট যাচ্ছে কোথায় ? এ প্রশ্ন নিয়েই টিকিটের সন্ধানে যাত্রীরা ।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিমানবন্দর রেল স্টেশনে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর আগামী ২ জুনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার বিমানবন্দর থেকে টিকিট কিনতে সেহরি খাওয়ার পর অনেকে স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেন। ভোরে এসে লাইনে দাঁড়ান তারা। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় টিকিট বিক্রি।
টিকিট কিনতে আসা বেশিরভাগ টিকিট ক্রেতার অভিযোগ, বাংলাদেশ রেলওয়ের চালু করা অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কেনা যাচ্ছে না। তাই তাদেরকে টিকিট কিনতে ভোরে এসে লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। কিন্তু লাইনে দাঁড়িয়েও ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ। লাইন এগোচ্ছে না ঠিকঠাক।
ভোর পৌনে ৬টায় ধানমন্ডি ১৫ নম্বর থেকে টিকিটের জন্য বিমানবন্দর আসেন মঈনউদ্দিন মো. তারেক। তিনি লাইনে দাঁড়িয়েও অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কেনার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সেই চেষ্টা করেও তার ভাগ্যে অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট জোটেনি। মিরপুরের আবু সালেক এসেছেন ভোররাতে সেহঁরি খেয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ৬ঘন্টা । সালেক সাহেব তার কাংখিত টিকিটের দেখা এখনও পাননি । অপর টিকিট প্রত্যশি
তারেক বলেন, রেলসেবা অ্যাপে ৫০ ভাগ টিকিট রয়েছে। অথচ এটি ডাউন। টিকিট কেনা যাচ্ছে না। তাই টিকিট কাটতে ধানমন্ডি থেকে বিমানবন্দর স্টেশনে এসেছি। লাইনেও আছি, দেরি হচ্ছে দেখে অ্যাপের মাধ্যমেও চেষ্টা করছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না।
একই স্থানে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় ক্ষেপে যেতে দেখা যায় এক ব্যক্তিকে। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, ‘৭ নম্বর কাউন্টারের সামনে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে একই স্থানে দাঁড়িয়ে আছি। তাহলে টিকিটটা পাচ্ছে কে?’
তিনি আরও বলেন, ‘অ্যাপে টিকিট বিক্রির প্রথম দিনই বলা হলো ৭০ শতাংশ টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। অথচ অ্যাপ কাজ করছে না! কাজ করলে অ্যাপে ৭০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হলো কীভাবে?
তবে অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট মিলেছে বলে জানান মো. জহিরুল ইসলাম জনি নামের এক ব্যক্তি। অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট পাওয়ায় তিনি বাড়ির উদ্দেশে ফেরার সময় পিবিএকে ‘ জানান সেহরির পর থেকে আমার বড় ভাই অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট টাকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সাবমিট নিচ্ছিল না। তখনই আমি টিকিটের জন্য বিমানবন্দর স্টেমনের উদ্দেশে রওনা দিই। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে স্টেশনে এসে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়াই। সকাল ৯টার সময় টিকিট বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু ৯টা ১৫ মিনিটে বড় ভাই ফোন করে জানান, অনলাইনে টিকিট পেয়েছেন তিনি। তাই এখন আমি বাসায় ফিরে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার চেষ্টা করছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কাটার চেষ্টা করছি। সিকিউরিটি কোড পর্যন্ত যেতে গেলে ‘কনফার্ম ফরম রিসাবমিশন’ দেখায়। আর কাজ করে না।’বিমানবন্দর স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান পিবিএকে জানান, আজকে যাত্রীদের যে ভিড় দেখা যাচ্ছে, সেটা স্বাভাবিক ভিড়ের মতোই। কিন্তু বাস্তব বলছে ভিন্নকথা । স্টেশনে টিকিট ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে ।
যাত্রীরা অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারছে না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অ্যাপের হিসাব আমাদের কাছে না। আমাদের জন্য যে টিকিট বরাদ্দ আছে, সব যাত্রীদের দেয়া হচ্ছে।
যাত্রীরা এক জায়গাতেই অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে। ধীরগতিতে টিকিট বিক্রি হচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার বলেন, টিকিট বিক্রির সময় যাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন করানো হচ্ছে। যাদের রেজিস্ট্রেশন করা আছে, তাদের রেজিস্ট্রেশন করতে হচ্ছে না। রেজিস্ট্রেশন করার সময় মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরসহ যাত্রীর বেশকিছু তথ্য লাগছে। এসব কারণে সময় একটু বেশি লাগছে।
পিবিএ/এইচটি