
পিবিএ,ঢাকা: গত ১৮ জানুয়ারি রাজধানীর শাহাজাহানপুরের আলোচিত মাংস ব্যবাসয়ী খলিলুর রহমান এর মোবাইল ফোনে অপর একটি মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি এবং কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে ও তার ছেলেকে দুই দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করা হয়। এছাড়াও খলিল এবং তার ছেলেকে হত্যা করার জন্য গুলি ও পিস্তল রেডি করা হয়েছে জানিয়ে তার মোবাইল ফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা ছাড়া লাশের ছবি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাংস ব্যবসায়ী খলিল রাজধানীর শাহাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন; যার ডায়েরি নম্বর-৮১৩, তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২৪। উক্ত ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-৩ ও র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাংস বিক্রেতা খলিলের কাছে চাঁদা দাবি করা এবং খলিল ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি ও নির্দেশদাতা ১। মোঃ নুরুল হক (৬৭), এবং তার অন্যতম সহযোগী ২। মোহাম্মদ ইমন (২২)-কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়া থানার পাথালিয়া ইউনিয়নের চারিগ্রাম এলাকায় ডিস ও ইন্টারনেট লাইনের ব্যবসার করে আসছে। স্থানীয় এলাকায় তার প্রায় ৫শ ডিস এবং ইন্টারনেট লাইনের সংযোগ রয়েছে। এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ ছিলো। বিরোধের জের ধরে কিছুদিন পূর্বে তার প্রতিপক্ষের সাথে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় তার ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে একজন তাকে আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার প্রদান করে তাকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিতে বলে। যার বিনিময়ে সে তার স্থানীয় এলাকায় ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায় কোন প্রতিবন্ধকতা বা কোন বাধার সম্মুখিন হবে না। ব্যবসায়ীক সুবিধার লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃত নুরুল হক গত ১৮ জানুয়ারি মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে ফোন করে ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি এবং কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃত নুরুল হক মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকি প্রদানের সময় চাঁদা দাবির পাশাপাশি তার ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষ সেলিমের নাম উল্লেখ করে বলে জানা যায়। পরবর্তীতে একই দিনে গ্রেফতারকৃত নুরুল গ্রেফতারকৃত ইমনকে একটি ফোন ধরিয়ে মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে গালাগালি করতে বলে। গ্রেফতারকৃত ইমন নুরুলের কথামতো খলিলকে ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকে এবং তাকে দুই দিনের মধ্যে হত্যা করবে বলে গুলি ও পিস্তল রেডি করে রেখেছে বলে জানায়।
এছাড়াও গ্রেফতারকৃত ইমন খলিলের মোবাইল ফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা কাটা লাশের ছবি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। পরবর্তীতে হুমকি প্রদানকৃত মোবাইল ও সিম কার্ডটি পানিতে ফেলে দেয়।
গ্রেফতারকৃত নুরুল হক ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় বসবাস করে এবং ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী। সে ডিস ব্যবসার পাশাপাশি কৃষি কাজ করতো। নুরুল হক এলাকায় বিভিন্ন জনকে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে চাঁদাবাজি, জমি দখল সহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত নুরুলের নামে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানায় হত্যার হুমকি, চাঁদাবাজি এবং মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধে ০৪টির অধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ইমন দীর্ঘদিন যাবত গ্রেফতারৃকত নুরুলের ডিসের ব্যবসার কাজে সহায়তা করতো। এছাড়াও সে গ্রেফতারকৃত নুরুলের সাথে এলাকায় বিভিন্ন জনকে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও সে মাদকাসক্ত ছিল বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।