
মিয়ানমারে বেসামরিকদের ওপর জান্তা বাহিনীর ‘নির্বিচার’ বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৯ সদস্য দেশ।
সোমবার (৫ জানুয়ারি) এক যৌথ বিবৃতিতে দেশটির সামরিক বাহিনীকে এই হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে তারা। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্ত ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচিসহ সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়ার কথাও বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
মিয়ানমারে একটি শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আঞ্চলিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। এই বৈঠকে জাতিসংঘের এক দূত ব্রিফ করেন। এর আগেই, জান্তাদের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে ওই নয় সদস্য দেশ।
এতে বলা হয়, মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের ওপর শুরু হওয়া সেনাবাহিনীর লাগাতার বোমা হামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ২৬৬৯ অনুযায়ী, আমরা দাবি জানাচ্ছি যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারে সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ত ও স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ নির্বিচারে আটক বন্দিদের শিগগিরই মুক্তি দেয়ার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়ো মোয়ে তুন সদস্য দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং রেজুলেশন অনুযায়ী আরো পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রেজুলেশন ২৬৬৯ গৃহীত হওয়ার পরও সামরিক জান্তা মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে রেজুলেশন মানতে জান্তা সরকারকে জোর করতে পারে না নিরাপত্তা পরিষদ। স্পষ্টতই আমাদের প্রয়োগযোগ্য একটা রেজুলেশন প্রয়োজন।
এসময় জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র, জ্বালানি ও অর্থ সহায়তা না দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান মোয়ে। সেনাবাহিনী অব্যাহতভাবে বেসামরিক মানুষসহ স্কুল, হাসপাতাল ও ধর্মীয় স্থাপনায় বিমান হামলা চালাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বার বার আমরা এটাই জানতে চাই, মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে তাদের সমস্যা কোথায়?
মোয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান, মিয়ানমারের সাম্প্রতিক অনলাইন স্ক্যাম অপারেশন, মাদকদ্রব্য ও মানবপাচারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধগুলো চিহ্নিত করার।
তিনি মনে করেন, এই অপরাধগুলো জান্তা সরকার ও তার সমর্থিত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহায়তায় ঘটছে। এই ধরনের অপরাধ এ অঞ্চলের মানুষের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে দাবি করে এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।
তবে এই বিবৃতিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দুটি স্থায়ী সদস্য দেশ চীন ও রাশিয়া অংশ নেয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের নয়টি সদস্য রাষ্ট্র যারা বিবৃতি দিয়েছে তারা হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইকুয়েডর ও মাল্টা।
সূত্র: দ্য ইরাবতী