রাজন্য রুহানি,জামালপুর: জামালপুরে মহান মে দিবসে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় নেতাদের অনুপস্থিতি ও অসহযোগিতায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনাও। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ভিন্ন কথা।
জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল চিশতী বলেছেন, ‘সকাল ৯টায় দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছি। তবে সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের কোনো সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন না।’
জানা গেছে, সোমবার (১মে) আন্তর্জাতিক মে দিবসে জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করে দিবসটি। এ উপলক্ষে জাতীয় শ্রমিক লীগ জামালপুর জেলা ও পৌর শাখার আয়োজনে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বের হয় র্যালি। কিন্তু জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সিনিয়র কোনো নেতাকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের পাশাপাশি চলছে নানারকম সমালোচনা।
জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল চিশতী বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি ছিলো রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম। শ্রমিক লীগ হিসেবে যথারীতি আমরা কর্মসূচি দিয়েছিলাম যে, সকাল ৯টায় আমরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবো। তারপর সকাল ১১টার সময় আমরা প্রশাসনের সাথে যৌথভাবে র্যালির আয়োজন করবো। র্যালি উদ্বোধনের সময় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ উপস্থিত ছিলেন। তবে সকাল নয়টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের সময় আওয়ামী লীগের নেতারা ছিলেন না। নিজেদের কণ্ঠে জাতীয় সংঙ্গীতের মধ্য দিয়ে আমি জাতীয় পতাকা ও আমার শহর শ্রমিক লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক দলীয় পতাকা উত্তোলন করেছি। এ সময় শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ বলেন, ‘শ্রমিক লীগ হলো ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। তারা তাদের নিজস্ব গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হয়। এ জায়গায় শ্রমিক লীগ যদি সরাসরি সহযোগী সংগঠন হতো, তাহলে এখানে শ্রমিক লীগেরও যেমন দায়বদ্ধতা থাকতো এবং আওয়ামী লীগেরও দায়বদ্ধতা থাকতো। কিন্তু শ্রমিক লীগ যেহেতু সহযোগী সংগঠন না এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে, জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এ দুটি রাজনৈতিক সংগঠন, তারা তাদের নিজস্ব গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালিত হবে। তাদের একমাত্র নেতা হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাননীয় সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাদের দায়বদ্ধতা সেই জায়গায়, আর কোথাও তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই, এটাই হচ্ছে মূল বিষয়। আমরা দায়িত্ব পাবার পর গঠনতান্ত্রিক বিধিবিধান অনুসরণ করেই রাজনীতিটা পরিচালিত হোক, এটা চাচ্ছি। লেজুরবৃত্তি যাতে না থাকে, এটা হচ্ছে মূল বিষয়। আর ওইটা তাদের (শ্রমিক লীগ) অনুষ্ঠান, তারা করুক। আমরা যেটাতে গিয়েছি, যেহেতু মে দিবসের কর্মসূচিটা সরকার এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো যৌথভাবে করে, আমরা সেই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপস্থিত হয়েছি। প্রশাসনের এবং শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে র্যালির দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। সে কারণে আমরা সকাল ১১টার সময় র্যালিতে অংশ নিয়েছি।’