
মোঃ সবুজ ইসলাম,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:-মাটি চাষে লাঙল ও গরুর ব্যবহার প্রায় শেষ হয়ে আসছে। ফসল রোপণ, কাটা এবং তোলার জন্য যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে কৃষি উৎপাদনে শ্রমিকের যে সংকট, তা অনেকটা কেটে যাচ্ছে।
কৃষির উন্নতি করতে যান্ত্রিকীকরণের কোনো বিকল্প নেই। এতে এক ফসলে বছরে একাধিকবার উৎপাদন সম্ভব হয়। পাশাপাশি উৎপাদন খরচও কমে আসছে। আর যন্ত্রের ব্যবহারে খরচ কম হওয়ায় কৃষকও ধান উৎপাদন করে ভালো দাম পাচ্ছেন।
চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষাবাদে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ৮০ হেক্টর জমিতে যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদ করা হচ্ছে।কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১২ টি রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে এসব জমিতে এবার চাষাবাদ করা হচ্ছে।
কৃষিযন্ত্র কিনতে এখন সরকার ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। এসব যন্ত্র কৃষির পাশাপাশি একজন কৃষককে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছে। আর কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে দেশে গড়ে উঠছে উদ্যোক্তা শ্রেণি। যার মাধ্যমে অনেকের ভাগ্য বদলে যাচ্ছে।
রাণীশংকৈল উপজেলায় শামসুল নামের এক কৃষক উদ্যোক্তা হিসেবে ৮০ একর জমির জন্য ট্রে এবং পলিথিনে বীজতলা তৈরী করে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধান রোপণ করেছেন।
হাড়িয়া গ্রামের রশিদুল নামের এক কৃষক নিজের জমিসহ মোট ৪০ একর জমির জন্য ধানের চারা উৎপাদন করে যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদ করছেন।
ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে অধিক জমিতে সুস্থ ও সবল চারা রোপন করছেন কৃষকরা। এতে সময়, শ্রম, অর্থ ও পানি সাশ্রয় হচ্ছে। পাশাপাশি জমিতে উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান উদ্যোক্তরা।
শামসুল আর রশিদুলের মতো অনেক কৃষক এখন চাষাবাদ শুরু করেছেন যন্ত্রের মাধ্যমে।
কৃষকরা জানান, এই যন্ত্রের সাহায্য সমগভীরতায়, সম দূরত্বে এবং অল্প শ্রমে ধানের চারা রোপন করা হচ্ছে। ফলে বিঘা প্রতি ধান রোপণের খরচ অর্ধেকে নেমে এসেছে।
আরও কয়েকজন কৃষক জানান, যেখানে একবিঘা জমিতে ধানের চারা এবং শ্রমিক সহ খরচ লাগতো ৩ হাজার টাকা আর এখন সেই খরচ অর্ধেকে নেমে এসেছে তাই এবার অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের সাহায্য জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করছি। এর ফলে সময় অনেক কম লাগছে। আশা করছি এবার একটু বেশি লাভবান হওয়া যাবে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক দিয়ে যে কাজ করলে সময় ও খরচ দু’টোই বেশি লাগতো এখন যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদ করতে পারলে দু’টোই কম লাগবে। এতে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হবেন। কৃষি ক্ষেত্রে সবসময় কৃষককে লাভবান করতে সঠিক পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষিকে বাণিজ্যিক এবং যান্ত্রিকীকরণে কৃষি দপ্তর পাশে আছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।