যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম, স্বামী জেলহাজতে!

মো: সাগর আকন, বরগুনা: বরগুনার তালতলীতে যৌতুকের টাকার দাবিতে সুমাইয়া বেগম নামের এক গৃহবধুকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে পাষন্ড স্বামী।১৪ এপ্রিল বুধবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের গাব্বারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ১৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধায় অভিযুক্ত স্বামী আঃ করিম খন্দকারকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গুরুতর আহত সুমাইয়া বেগমকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সুমাইয়ার পারিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের গাব্বারিয়া গ্রামের আঃ মজিদ খন্দকারের ছেলে আঃ করিম খন্দকার এর সাথে প্রায় ১১ বছর আগে কড়াইবাড়ীয়া ইউনিয়নের ছিদ্দিক হাওলাদের মেয়ে সুমাইয়া বেগমের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। বর্তমানে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর থেকেই আঃ করিম তার স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই মারধর করতো। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়রা ও প্রতিবেশীরা সালিশ মীমাংসা করে আঃ করিমকে আর্থিক সহযোগিতা করেছে। কিন্তু আঃ করিম যৌতুেকর দাবীতে ফের সুমাইয়াকে মারধর করে।
স্বামীর এমন নিষ্ঠুর অত্যাচার সইতে না পেরে কয়েক মাস আগে সুমাইয়া তার বাপের বাড়ি চলে আসে।

সুমাইয়ার মামাত ভাই রুবেল জানান, সুমাইয়ার পরিবার পুলিশকে বিষয়টা অবহিত করতে চাইলে বগীর হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস তালুকদার সালিশ মীমাংসার কথা বলে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পূনরায় ঘটবেনা শর্তে মেয়েটিকে তার বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যায়। গত বুধবার গভীর রাতে ঘুমের ঘরে পাষণ্ড স্বামী আঃ করিম তার স্ত্রীকে দেশীয় দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।

এ সময় সুমাইয়ার ডাকচীৎকারে আশপাশের লোকজন দৌড়ে এলে পালিয়ে যায় স্বামী আঃ করিম। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৩০ টিরও বেশি দেশীয় দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে।

সুমাইয়ার বাবার বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে জরুরী চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা নেয়ার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে আহত সুমাইয়ার বড় ভাই আবু হানিফ বলেন, বিভিন্ন সময় আমার বোনকে অত্যাচার করে যৌতুক নিয়েছে আমার ভগ্নিপতি আঃ করিম। গত কয়েক মাস আগে আঃ করিম ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেছে কিন্তু আমার বোন টাকা দিতে অস্বীকার করায় আঃ করিম বোনকে আরও বেশী নির্যতন করে। নির্যাতন সইতে না পেরে সুমাইয়া আমাদের বাড়িতে চলে আসে। কয়েক দিন আগে বগীরহাট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস তালুকদার অভিভাবক হয়ে আমার বোনকে তার শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যায়। আঃ করিম আমার বোনকে খুন করতে চেয়েছিল, আমার বোন এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস তালুকদার সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান মিয়া জানান, এ ঘটনায় মেয়ের আপন ভাই হানিফ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছে, অভিযান চালিয়ে মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...