পিবিএ,স্পেন: চলতি গ্রীষ্মে স্পেনের রেকর্ড ছাড়ানো ৪৭.৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। করডোবা প্রদেশের মনতরো শহরে দেশটির রাষ্ট্রীয় আবহাওয়া সংস্থা দেশটির এ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছড়ানোর রেকর্ড করে। চলতি মাসে গত এক সপ্তাহের মধ্যে অতিরিক্ত গরমে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
অসহনীয় তাপমাত্রায় শারীরিক অসুস্থতায় সম্প্রতি দেশটির লা রিয়োখাতে ৮৬ বছরের একজন বৃদ্ধ, করডোবাতে ১৭ বছরের এক যুবক, ভাইয়াদলিদে ৯৩ বছরের বৃদ্ধ, লগরোনিও তে ৯০ বছরের নারী এবং খামারে গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে সেভিইয়াতে ৬৬ বছরের মধ্যবয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জাভিয়ের মার্টিন ভিড জানান, এর আগে ১৯৯৪ সালের ৪ জুলাই দেশটির মুরসিয়া শহরে সর্বোচ্চ ৪৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল। এবারের জুলাই মাসে তাপমাত্রা সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে স্পেনের জনজীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে।
বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ বলেন, মূলত গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের শিকার হয়ে পৃথিবীর সার্বিক তাপমাত্রার নেতিবাচক প্রভাবের কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত ইউরোপের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে অবস্থিত এ আইবেরিয়া উপদ্বীপ রাষ্ট্র স্পেনে মূলত জুলাই ও আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকে। মে মাস থেকে এ অঞ্চলে গরম পড়া শুরু করলেও এবার জুনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্তও গরম আসেনি। এ সময় ফ্যানের পরিবর্তে রাতে ঘুমাতে গিয়ে পাতলা কাপড়ের কম্বল ব্যবহার করেছে মানুষজন। পরে জুলাই মাসে হঠাৎ করেই এ মাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে অনেকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় গরমকে সহ্য করে নিচ্ছেন অধিবাসীরা। এ বছরের তীব্র গরমের প্রভাব স্পেনের করডোবা, সেভিইয়া, গ্রানাদা, তলেদো, মুরসিয়াতে সবচেয়ে বেশি।
এছাড়া দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর রাজধানী মাদ্রিদে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল শহর বার্সেলোনাসহ কাতালোনিয়া অঙ্গরাজ্যে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাবে বলে সতর্কতা জারি করেছে আবহওয়া অধিদফতর।
এ প্রচণ্ড গরমের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় পর্যটন শিল্পেও নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে। সামারে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায় জড়িত বাংলাদেশিরা তূলনামূলকভাবে কম বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে। পর্যটক কম আসায় একই সময়ে আগের বছরের তুলনায় কম ব্যবসা হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
পিবিএ/কবির আল মাহমুদ/এমএসএম