পিবিএ,লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে একাধিক মিল চাতাল মালিক রাতের আধারে খাদ্যগুদামে নিম্নমানের চাল ঢুকাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, লালমনিরহাট জেলায় মোট ৭ টি খাদ্যগুদাম রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম আর দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে আছে লালমনিরহাট সদর খাদ্যগুদাম। যেখানে সরকারি খাদ্য শস্য নীতিমালায় বলা আছে সিদ্ধ চালের সর্ব্বোচ্চ আর্দ্রতা ১৪ শতাংশ, বড় ভাঙ্গা দানা ৬ শতাংশ, ছোট ভাঙ্গা দানা ২ শতাংশ, বিনষ্ট দানা ০.৫ শতাংশ, মরা দানা ০.৫ শতাংশ, বিবর্ণ দানা ০.৫ শতাংশ, ভিন্ন জাতের মিশ্রণ ৮ শতাংশ, বিজাতীয় পদার্থ ০.৩ শতাংশ, ধান প্রতি কেজিতে ১ টি এবং অর্ধসিদ্ধ দানা ১ শতাংশ থাকলে উৎপাদিত চাল সংগ্রহের যোগ্য। কিন্তু চলতি আমন মৌসুমে লালমনিরহাট সদর খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান সরকারি নির্দেশনা আর নীতিমালা না মেনে কতিপয় মিল চাতাল মালিকদের সাথে যোগসাজসে নিম্নমানের চাল গুদামে ঢুকাচ্ছেন। যেখানে সরকারি খাদ্য শস্য সংগ্রহ নীতিমালার কোন মিল নেই। এমন কি অতি অবৈধ অর্থের লোভে রাতের আধারেও খাদ্যগুদামে ঢুকানো হচ্ছে নিম্নমানের চাল।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে লালমনিরহাট জেলার মিল চাতালের নামে সরকারি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪ হাজার ৮২৯ মেঃ টন। এর মধ্যে লালমনিরহাট সদর খাদ্যগুদামে ১ হাজার ১৬৪ মেঃ টন, তিস্তা খাদ্যগুদামে ১৫৮ মেঃ টন, আদিতমারী উপজেলা খাদ্যগুদামে ৮২৬ মেঃ টন, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা খাদ্যগুদামে ৬১৪ মেঃ টন, ভোটমারী খাদ্যগুদামে ১৬৭ মেঃ টন, হাতীবান্ধা উপজেলা খাদ্যগুদামে ৮৮৩ মেঃ টন এবং পাটগ্রাম উপজেলা খাদ্যগুদামে ১ হাজার ১৭ মেঃ টন চাল মিল চাতাল মালিকদের নিকট থেকে সংগ্রহ করা হবে।
লালমনিরহাট সদর খাদ্যগুদামের শ্রম ও হস্তার্পণ ঠিকাদার হায়দার আলী জানান, গুদামে আমার নিয়োগকৃত শ্রমিক ছাড়া অন্য কোন শ্রমিক কাজ করতে পারবে না। এর মধ্যে আমার নিয়োগকৃত কোন শ্রমিক রাতে কাজ করেনি। যদি রাতের আধারে গুদামে কোন চাল বের করা অথবা ঢুকানো হয় এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে অন্য কোন শ্রমিক দিয়ে আমার অজান্তে গুদামে কাজ করালে তার দায় দায়িত্ব আমার নয়, গুদাম কর্মকর্তার।
লালমনিরহাট সদর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি এ ব্যাপারে কোন প্রকার কথা বলতে রাজি নন।
লালমনিরহাট সদর খাদ্য নিয়ন্ত্রক আইয়ুব আলী জানান, খাদ্যগুদামে সরকারি নির্দেশনা মেলে চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। যদি কোন মিল চাতাল মালিক খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সাথে যোগসাজসে নিম্নমানের চাল গুদামে ঢুকান তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, নিম্নমানের চাল সংগ্রহ করা যাবে না। সরকারি নীতিমালা মেনে চাতাল মালিকদের নিকট থেকে চাল সংগ্রহ করতে হবে। আর এ সময় খাদ্যগুদামে কাজের চাপ অনেকটাই কম আছে। সেক্ষেত্রে রাতের আধারে চাল সংগ্রহ করার কোন দরকার নেই। তার পরেও যদি সদর খাদ্যগুদামে রাতের আধারে চাল সংগ্রহ করা হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পিবিএ/আসাদুল ইসলাম সবুজ/এমএসএম