সরকারের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ১৫০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘সরকার ৩০০ আসনে ইভিএম চেয়েছিল। কমিশন সমঝোতার মাধ্যমে অর্ধেক আসনে সরকারের সঙ্গে রফাদফা করেছে। এর মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত যে, নির্বাচন কমিশন সরকারের হয়েই কাজ করছে। বিএনপি নির্বাচন কমিশন নিয়ে ভাবছে না। এ সরকারকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করা নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করছি আমরা।’
বুধবার (২৪ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল বলেন, ‘অনেক চড়াই-উতরাই গেছে এ দলের ওপর। প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে দেশের জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। বিএনপি আবার খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জেগে উঠেছে। কিন্তু তিনি কারান্তরীণ হয়ে আছেন। বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্ট আর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে যারা বলেন, তারা অসত্য বক্তব্য দিচ্ছেন। বরং তারাই সে পথ ধরেই নিজেরা আসছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জনগণের অধিকার হরণ করে, সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে, জবরদখল করে ক্ষমতায় টিকে আছে আওয়ামী লীগ সরকার। তারা কথা বলে এক রকম, আর কাজ করেন অন্যরকম। প্রধানমন্ত্রী একদিকে বলেন সভা সমাবেশ করতে দেবেন, অন্যদিকে ভোলায় গুলি করে দুজনকে হত্যা করা হলো।’
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বক্তব্যমতে খেলা হচ্ছে। কিন্তু সেটা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় আর বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর। কোথাও স্বাভাবিকভাবে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।’
বর্তমান সরকারের হাত থেকে জনগণ মুক্তি চায় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই। আমাদের মূল দাবি, সরকার পরিবর্তন না হলে কোনো কমিশনের অধীনেই নির্বাচনে সুষ্ঠু হবে না। সরকারের সঙ্গে ইসির রফাদফা হয়েছে, যার মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। ইভিএমে ভোটের মাধ্যমে ইসি সরকারের ইচ্ছার চূড়ান্ত প্রতিফলন ঘটাবে। এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই।’
ফখরুল বলেন, ‘সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হতে হবে ব্যালট পেপারে। তবে তার আগে অবশ্যই সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।