
পিবিএ,ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমান জনধিকৃত সরকার গণতন্ত্রের জন্য অকুতোভয় আপসহীন সংগ্রামী নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওবিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করেনি।’ তিনি বলেন, ‘সুচিকিৎসা ও জামিনে বাধা প্রদানের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ও ভয়ংকর নীলনকশা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। পুরো আইনী প্রক্রিয়াতে প্রতিহিংসা পরায়ণতা আর জিঘাংসায় ভরপুর। দেশনেত্রীকে প্রাণহানির হুমকির মুখে ফেলে রেখে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে।’মঙ্গলবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, লন্ডন থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরপরই বেগম খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনার জন্য কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত বসাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে। গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে পিজি (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়ার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পন্ন হয়নি, তিনি এখনও বেশ অসুস্থ। কিন্তু তাকে শিগগিরই কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নতুন নির্মিত মহিলা কম্পাউন্ডে স্থানান্তর করার অশুভ আয়োজন চলছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তার নামে ১৭টি মিথ্যা মামলার বিচার কার্যক্রম ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপন জারী করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।’
রুহুল কবির রিজভী আরোও বলেন, ‘দেশের প্রতিটি বিবেকবান মানুষ আশা করেছিলেন, এই পবিত্র রমজানে অন্তত জনগণের নেত্রীকে মুক্তি দিয়ে জনগণের মাঝে ফিরে আসতে দেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ মানসিকতা ত্যাগ করতে পারেননি। আদালতকে কুক্ষিগত করে রেখে বেগম জিয়ার জামিনে পদে পদে বাধা দেয়া হচ্ছে।’তিনি বলেন, ‘এদেশের প্রাণ কৃষকদের এখন নাভিশ্বাস দশা। ধান চাষ করে লোকসান দিয়ে তাদের পথে বসার অবস্থা হয়েছে। কৃষকের ঘরে ঘরে এখন আনন্দের পরিবর্তে চলছে
হাহাকার। এই মিডনাইট ইলেকশনের সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত, বিদ্যুৎ-জ্বালানী ও সারের মূল্য বৃদ্ধিসহ কৃষকদের প্রতি উদাসীনতার কারণে উৎপাদন খরচ উঠছে না কৃষকের। প্রতিমন ইরি-বোরো ধানে লোকসান দিচ্ছেন ২০০ টাকা করে। বর্গাচাষিরা সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছেন। বিঘা প্রতি জমিতে লোকসান দিচ্ছে ৫ হাজার টাকা। লোকসানের পর ব্যাংক ঋণ, এনজিও’র কিস্তি, মহাজন ও সার-কীটনাশক ব্যবসায়ীদের দেনা শোধ করা দায় হয়ে পড়েছে। নানা ঋণে জর্জরিত কৃষক ক্ষোভে দুঃখে কষ্টে ধানের দাম না পেয়ে পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছেন। বিক্ষোভ করছেন। সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ধান ক্ষেতে আগুন দেয়ার ঘটনা নজিরবিহীন।’
সিরাজগঞ্জ শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সানোয়ার হোসেন সানুকে কয়েকদিন আগে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তুলে নিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত তার কোনো হদিস দিচ্ছে না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘সবাই জানে যে, সানু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেই আছে। তারপরও তার হদিস না দেয়াটা কোনো ভয়ঙ্কর পরিণতিরই ইঙ্গিত বহন করে। এই ধরণের ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও তার পরিবার গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সানু রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেলেও তাকে ফেরত দেয়া হচ্ছে না। এটা সরকারের চরম মানবতাবিরোধী কাজ। এই অমানবিক কাজটি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে সরকার নির্বিঘ্নে চালিয়ে আসছে। আমি অবিলম্বে সানোয়ার হোসেন সানুকে জনসমক্ষে হজির করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’
পিবিএ/এইচটি