সোহাগ হাসান জয়,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁদা না দেয়ায় সিরাজগঞ্জের শিয়ালকোলের ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও স্বর্ণলঙ্কার লুটের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা জুয়েল রানার বিরুদ্ধে। তাদের হামলায় ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও মেয়েসহ বাড়ির অনেকেই আতংক ও নিরাত্তায় দিন পার করছেন। এ ঘটনায় আব্দুুর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত জুয়েল রানা সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের মৃত কুদ্দুস শেখের ছেলে ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহবায়ক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবাসায়ী আব্দুর রহমানসহ তাদের পরিবারের সদস্যের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। এই ধারাবাহিকতায় গত (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টার দিকে উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের জুয়ালভাঙ্গা গ্রামের মৃত কুদ্দুসের ছেলে বিএনপি নেতা জুয়েল রানা ও তার সহযোগী ফেরদৌস, আবুল চৌধুরী, লতিফ, কামরুল, মজনু, সুমিত, হায়দার আলী, মাসুদ রানাসহ ২০/২৫ জন রাম দা, হকিস্টিক, লোহার রড়, ছুরিসহ দেশী অস্ত্র নিয়ে বাদি আব্দুর রহমান, ও তার ভাই হাসেম, জাহাঙ্গীর ও আব্দুল আজিজের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাংচুর ও নগদ প্রায় ৪ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকা সমূল্যের গহনা লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধান হয়েছে তাদেরন।
স্থানীয়রা জানায়, বিএনপি নেতা জুয়েল রানা দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খা বাহিনীর চক্ষুর আড়ালে এলাকায় ইয়াবা ও গাঁজার ব্যবসা করে আসছে। তার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে জুয়েল রানার বাহিনী দিয়ে অসহায় ও নিরিহ পরিবারের উপর হামলা ও চাঁদা বাড়ি করে আসছে। তাদের এই অপকর্মে বাঁধা দেওয়ার কেউ নেই। এমনকি মুখ খুলতেও কেউ সাহস পায় না।
অভিযোগকারী আব্দুুর রহমান জানান, আমরা দুই ভাই চাকরি করি, দুই ভাই ব্যবসা করি। দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিলো জুয়েল ও তার সহযোগীরা। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় রাস্তায় আমার ভাইয়ের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে জুয়েল বাহিনী। এমনকি জুয়েল এক সময় আওয়ামী লীগ করলেও গত (৫ আগষ্ট) নতুন সরকার আসার পর থেকে এখন বিএনপির বড় নেতা হয়ে গেছে। অথচ আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
অভিযুক্ত জুয়েল রানার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করে নাই। তবে জুয়েল রানার স্ত্রী আমিনা খাতুন জানান, জুয়েল রানা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে যেদিন আব্দুর রহমানের বাড়িতে ভাংচুরে শব্দ শুনেছি। তবে সেখানে আমার স্বামী ছিলো না। তারা ষড়যন্ত্র করছে।
এবিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, বিএনপি থেকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি প্রতিহিংসাত্মক ভাবে কারও বাড়িতে ভাংচুর, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগ ওঠে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে এ ঘটনায় জুয়েলসহ দু’জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, হামলা ও ভাংচুরের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের আলোকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছি। বিষয়টি তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।