সোহাগ হাসান,সিরাজগঞ্জ: সিরজগঞ্জে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে শুরু হয়েছে ভিজিডির চাউল বিতরণ। শুরুতেই চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ। টাকা ছাড়া মিলছেনা কার্ডধারীদের চাল। টাকা ছাড়া ভিজিডি কার্ডের চাউল দিচ্ছেনা এমন অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ৪নং ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সলঙ্গা থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে। ২৪০ টাকা ছাড়া চাউল দিচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুস্থ নারীদের উন্নয়নের জন্য ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট বা ভিজিডি কর্মসূচি বাংলাদেশ সরকারের একটি সর্ববৃহৎ সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি। এই কর্মসূচীতে প্রত্যেক কার্ডের জন্য বরাদ্দের দুই মাসের ৬০ কেজি করে ভিজিডি চাউল দেওয়া কথা রয়েছে। কিন্তু উক্ত কার্ডের চাউল বিতরণে টাকা ছাড়া চাউল দিচ্ছে না ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান।
গত মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাসিদেবকোল গ্রামের সুখজান, হনুফা বেগম, আজিরণ নেছা, আপরোজা খাতুন, ঘুড়কা চর এলাকার ছালমা খাতুন, লায়লা খাতুন, ও রয়হাটি গ্রামের রাশিদা খাতুন, শেফালী বেগমসহ একাধিক কার্ডধারী ভিজিডির ৩০ কেজি চাউল নেওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে আসে।
ঐ সময় কার্ডধারীদের নিকট থেকে চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি মেম্বর জনাব আলীকে দিয়ে প্রত্যেকের ২৪০ টাকা দাবী করে। কার্ডধারীরা টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাদেরকে টাকা ছাড়া চাউল দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় চেয়ারম্যানের লোকজন। পরে কার্ডধারীরা ২৪০ টাকা দিলে চাউল বিতরণ শুরু করে।
এ ব্যাপারে ঘড়কা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জনাব আলী টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, চাউল আনতে পরিবহন খরচ বাবদ বস্তা প্রতি ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এই টাকা নেওয়া অবৈধ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের অনুমতিতেই টাকা নেওয়া হচ্ছে।
ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বলেন, আমি কারো কাছে টাকা চাইনি। সবাইকে সমান ভাবে চাউল দেয়া হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি উঠেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রায়গঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খাদিজা নাসরিনকে একাধিক বার ফোন দিলেও সে রিসিভ করেনি। এজন্য তার স্বাক্ষাৎকার নেওয়া সম্বব হয়নি।
দায়িত্ব প্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুর সবুবকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত না পেয়ে তাকে ফোন করা হয়। পরে তিনি জানান, টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। টাকা নেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল আলম জানান, টাকা নেওয়ার কথা আমি অবগত নই। কার্ডধারীদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য টাকা নিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রায়গঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন জানান, ভিজিডি চাউল বিতরণে টাকা নেওয়ার কোন বিধান নেই। যদি টাকা নিয়ে থাকে। তাহলে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, ভিজিডির চাউল বিতরণে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এর পরেও যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিবিএ/এমএসএম