পিবিএ,সিরাজগঞ্জ: প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শস্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছিলেন সন্তান সম্ভাবা এক মা। কিন্তু হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসক ও নার্স সবাই মুখ ফিরিয়ে নেন তার থেকে। মুখের উপর বলে দেন এ হাসপাতালে আপনার চিকিৎসা নেই। পরে সেবা না পেয়ে জনসম্মুখে সন্তান প্রসব করেছেন ঐ প্রসূতি। রোববার (১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শস্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।
প্রসূতির পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রুপসাচর এলাকার মো. আব্দুর রহিমের স্ত্রী মোছাঃ রহিমা খাতুন (২২) গর্ভকালীন সমস্যা নিয়ে রোববার রাত ১০ টার দিকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার পর প্রসবের কোন ব্যথা অনুভব না হওয়া ও রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে এই মর্মে রহিমা খাতুনকে ১০ টা ২০ মিনিটের দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক বনশ্রী শাহা ছাড়পত্র প্রদান করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেন।
ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক বনশ্রী শাহা প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকা প্রসূতি রহিমা’র চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে ফোনে কথা বলতে থাকেন। এ পর্যায়ে রোগীর বেদনা আরও তীব্র হলে প্রসূতির স্বামী মো. আব্দুর রহিম গাইনী ও প্রসূতি ওয়ার্ড এর ২য় তলা থেকে চিকিৎসা না পেয়ে নিচে নামিয়ে হাসপাতালের প্রধান ফটক ইমাজেন্সির রুমের বাইরে সিএনজিতে ওঠানোর সময় জনসম্মুখেই সন্তানের জন্ম দেন রহিমা খাতুন।
এদিকে খোলা পাকা জায়গা সন্তান প্রসব করায় সন্তান গুরুতর আহত হন। পরে রোগীর স্বজন স্থানীয়দের তোপের মুখে প্রসূতি মা ও নবজাতককে শিশু ওয়ার্ড ও রহিমাকে গাইনী বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গাইনী ও প্রসূতি ওয়ার্ড’র সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাহমিদা খাতুন ও শিল্পী খাতুন বলেন, প্রসূতি রহিমাকে ডাক্তার বনশ্রী শাহা ছাড়পত্র দিয়েছিলো তাই তাকে চলে যেতে বলেছিলাম।
প্রসূতির স্বামী আব্দুর রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার স্ত্রী যখন প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলো তখন তিনি বারবার দায়িত্বরত ডাক্তারকে অনুরোধ করেও সেবা পাননি। অবশেষে খোলা আকাশের নিচেই তার স্ত্রীকে সন্তান প্রসব করতে হয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার চান।
প্রসূতি রহিমা খাতুন বলেন, তিনি যখন প্রসব ব্যথায় কাতর তখন হাসপাতালের সেবিকারাও তাকে সাহায্য করতে আসেনি। এ বিষয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক বনশ্রী শাহা’র সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রশ্নের সদত্তর দিতে না পেরে ফোনটি কেটে দেন। এ প্রসঙ্গে বঙ্গমাতা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে চিকিৎসক প্রসূতির অবস্থা একটু জটিল হওয়ায় ছাড়পত্র প্রদান করেছিলেন।
পিবিএ/সোহাগ লুৎফুল কবির/বিএইচ