মহিউদ্দিন আল আজাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে শশুড় বাড়িতে এসে ক্ষিপ্ত জামাই ছুরিকাহত করে স্ত্রীকে হত্যা ও শাশুড়ী এবং শ্যালককে গুরুতর জখম করেছে। ১৩ মে বুধবার ইফতারের কিছু সময়ে পুর্বে উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। হত্যাকারী জামাই আল মামুন মোহন(৩২)কে গনপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এলাকাবাসী।
জামাতা আল মামুনের বাড়ি পাশ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় । নিহত স্ত্রী গৃদৃকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ডিগ্রি বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিনা আক্তার রিতু(২০) এবং গুরুতর আহত শাশুড়ী পারভীন আক্তার (৪৫)এবং শ্যালক প্রান্ত (১৭)। পুলিশ ফরিদগঞ্জ রাতেই পোস্ট মর্টেমের জন্য নিহত রিতুর লাশ উদ্ধার করেছে । অপরদিকে গুরুতর আহত শাশুড়ি পারভীন আক্তার চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আশংকাজনক চিকিৎসাধীন এবং শ্যালক প্রান্ত গৃদকালিন্দিয়া বাজারে চিকিৎসা নিচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, আড়াই বছর পুর্বে রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মনতাজ মাস্টারের ছেলে আল মামুন মোহন ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া গ্রামের খাঁ বাড়ির সেলিম খানের মেয়ে তানজিনা আক্তারকে বিয়ে করে। বিয়ের পর সৌদি আরবে গেলেও গত দেড় বছর পুর্বে আল মামুন মোহন সৌদি আরব থেকে ফেরত আসে।এর থেকে এলাকায় বেকার অবস্থায় রয়েছে। ১৩ মে বুধবার বিকালে সে তার নিজ বাড়ি রায়পুর থেকে শশুড় বাড়ি গৃদকালিন্দিয়া আসে। ইফতারের পুর্বে মূর্হূতে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুর সাথে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে রিতুকে উপর্যুপরি ছুরিকাহত করে। এব পর্যায়ে মেয়ের আত্মচিৎকারে মা পারভীন আক্তার ও ভাই প্রান্ত এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ছুরিকাহত করে মোহন।
এসময় সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশেপাশের লোকজন টের পেয়ে তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এদিকে এলাকার লোকজন দ্রুত রিতু , তার মাকে ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিতুকে মৃত ঘোষনা করে। আশংকা জনক অবস্থায় পারভীন আক্তার চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া আহত ভাই প্রান্ত গৃদকালিন্দিয়া বাজারে চিকিৎসা নেয়।
নিহত রিতুর মামী তাছলিমা বেগম জানায়, সৌদি আরব থেকে মোহন চলে আসার পর বেকার অবস্থায় ছিল। বিয়ের সময় রিতুকে দেয়া স্বর্ণালংকার সবকিছু বিক্রি করে ফেলে সে। তার বাড়িকে বসবাস করার জন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় রিতু স্বামীর বাড়িতে যেতে চাইতো না। সে বাপের বাড়ি থেকেই পড়ালেখা করতো। এই সব বিষয় নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্ধের জের ধরে রিতুকে হত্যা করে এবং তার মা ও ভাইকে আহত করে মোহন।
ঘাতক মোহন ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় জানায়, তার স্ত্রী পরকিয়ায় লিপ্ত। তার প্রবাস থেকে পাঠানো সকল অর্থ তারা আত্মসাৎ করেছে। তাকে পাত্তা দিতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে ছুরিকাহত করেছে।
ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের এস আই কাজী মো: জাকারিয়া ঘটনাস্থল থেকে মোহনকে আটক করে এবং পোস্ট মর্টেমের জন্য লাশ উদ্ধার করে। এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রকিব জানান, নিহত রিতুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক মোহনকে আটক করা হয়। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।
পিবিএ/বিএইচ