পিবিএ, ঝিনাইদহঃ হিজড়াদের দলে ভেড়াতে ঝিনাইদহের দুই যুবক সাগর হোসেন (২২) ও প্রান্ত সরকার (১৮) কে অপহরণের পর লিঙ্গ কর্তন করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে দুইটি মামলা হয়েছে। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে নির্দেশ দিয়েছে।
চাকলাপাড়ার সাইকেল মিস্ত্রী উজ্জল সরকার জানান, তার ছেলে ঝিনাইদহ সরকারী বালক বিদ্যালয়ে পড়তো। চাকলাপাড়ার এক হিজড়া তাকে বিপথগামী করে তোলে। উপায় না পেয়ে ছেলেকে একটি মামলা দিয়ে
জেলে পাঠায়। জেলে যাবার পর হিজড়াদের গাত্রদাহ শুরু হয়। প্রান্ত সরকার হিজড়া না হলেও তার জন্মনিবন্ধন, হিজড়া সনদ ও সমাজসেবার প্রত্যায়নপত্র জোগাড় করে তাকে জেল থেকে বের করে আকাশি নামে এক হিজড়া।
জামিনে মুক্ত হয়ে প্রান্ত সরকার আর বাড়ি ফেরেনি। সন্তানের জন্য পাগল হয়ে যায় উজ্জল সরকার। এরই মধ্যে প্রান্ত ও সাগরকে অপহরন করে খুলনা অঞ্চলের একটি গুদাম ঘরে আটকে রেখে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে
দু’জনেরই লিঙ্গ পরিবর্তন করে হিজড়ারা। এ নিয়ে তারা ঝিনাইদহের একটি আদালতে মামলা হয়।
আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য পিবিআই সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানান ওই দই যুবক। ঝিনাইদহ শহরের আরাবপুর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে সাগর হোসেন জানান, গত ১২ জুলাই রাত ৯ টার
দিকে তিনি ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসষ্টান্ড এলাকা থেকে আরাবপুর এলাকায় যাচ্ছিলেন।
পথে নবগঙ্গা নদীর উপর ব্রীজ এলাকা থেকে একটি কালো রং এর মাইক্রোবাস তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর খুলনা ফুলতলা এলাকায় নিয়ে একটি গুদাম ঘরে আটকে রাখে। ওই রাতেই তাকে অচেতন করে ডাক্তারের মাধ্যমে অস্ত্রপচার করে। জ্ঞান ফেরার পর তিনি দেখতে পান তার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে।
তিনি আরো দেখতে পান পাশে প্রান্ত সরকার নামের আরেকজন একই অবস্থা করে ফেলে রেখেছে। প্রান্ত সরকার জানান, হিজড়ারা গত ১১ জুলাই সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তাকে শহরের তসলিম ক্লিনিকের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ফুলতলা এলাকায় নিয়ে অচেতন করে তার শরীরে অস্ত্রপচার করে। সাগর ও প্রান্ত জানান, তারা এই অন্যায়ের বিচার চেয়ে ঝিনাইদহ আদালতে পৃথক দুইটি মামলা করেছেন।
এই মামলায় তারা আসামী করেছেন শহরের কাঞ্চননগর এলাকার বাসিন্দা আকাশী ওরফে খোকন (৪৫), ভুটিয়ারগাতি এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারা ওরফে আবু সাঈদ (৪২), উদয়পুর এলাকার বাসিন্দা কারিশমা ওরফে লিয়াকত (৩০) ও ব্যাপারীপাড়া এলাকার মনোয়ারাকে (৫০)। দুই যুবকের আইনজীবী এড মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, তারা এই অন্যায়ের বিচার চেয়ে আদালতে পৃথক মামলা দায়ের করেছেন।
আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ঝিনাইদহ পিবিআইর এসআই মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আদালতে হিজড়াদের দায়ের করা ৩টি মামলা পিবিআই তদন্ত করছে। তিনি কেবল প্রান্ত সরকারের মামলাটি দেখভাল করছেন।
পিবিএ/কামরুজ্জামান লিটন/ইকে