কিশোরগঞ্জে বখাটের উৎপাতে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

পিবিএ,নীলফামারী: বখাটে এক কলেজ ছাত্রের উৎপাত সহ্য করতে না পেরে আত্নহত্যা করেছে, কারিমা আক্তার কার্নিজ (১৪) নামের এক স্কুল ছাত্রী। কার্নিজ ওই গ্রামের কৃষক আবুল কালামের মেয়ে ও কিশোরীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী। রোল নং-৯৫১৯৯০।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কলকুটি পাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। কার্নিজ তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড়।

এ ঘটনার পর পালিয়ে গেছে বখাটে কলেজ ছাত্র কাওছার আলী (১৮)। কাওছার একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। সে উপজেলার পুটিমারী বিএম কলেজের প্রথম বর্ষের ব্যাংকিং শাখার প্রথম বর্ষের ছাত্র। রোল নং ২৩। কারিমা আক্তার কার্নিজের বাবা আবুল কালাম ও মা শিল্পী বেগম অভিযোগ করে জানায়, গ্রামের কাওছার আলী তাদের মেয়েকে বেশ কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এনিয়ে গত ১০ দিন আগে গ্রামের বিচার সালিশে কাওছার আর উৎপাত করবেনা বলে ক্ষমা চায়।

কিন্তু গত শনিবার (১৬ নভেম্বর) কারিমা আক্তার কার্নিজ জেএসসির শেষ পরীক্ষা দিয়ে ফিরে আসার সময় রাস্তায় পুনরায় উৎপাত করে কাওছার। মেয়ে বাড়ি ফিরে বিষয়টি জানালে তারা কাওছারের পরিবারের কাছে অভিযোগ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাওছার ছুটে এসে কার্নিজের বাবাকে মারপিট করে হুমকী দেয় এবার দেখবো তোমাদের মেয়ে কি করে বাড়ির বাহিরে যায়। তাকে আমি বিয়ে করে বউ বানাবো।

এ নিয়ে গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হলে পুলিশ এসে তা থামিয়ে দিয়ে চলে যায়। কিন্তু কাওছারের হুমকী ধামকিতে কারিমা আক্তার কার্নিজ বাড়ির বাহিরে বের হতে পারছিলনা। আজ ঘটনার দিন সকালে মেয়েটি বাড়ির বাহিরে দরজায় দাঁড়ালে কাওছার ছুটে এসে তাকে বউ বউ বলে ডাকতে থাকে। এ অবস্থায় মেয়েটি তার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

এর কিছুক্ষন পর ঘরে একটা শব্দ হলে পরিবারের লোকজন ছুটে গিয়ে মেয়েকে হাকডাক দিতে থাকে। কোন সারা শব্দ না পেয়ে তারা ঘরের দরজা ভেঙ্গে ফেলে দেখতে পায় ঘরের তীরের সঙ্গে দড়ি বেধে গলায় ফাঁস দিয়ে তাদের মেয়ে ঝুলছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় তারা মেয়েকে নামিয়ে উপজেলা হাসপাতালে নিলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বাবু, এলাকার সচেতন ব্যক্তি হোসেন সহীদ সোরয়ার্দ্দী, সফি, রিয়াদ সহ অনেকে বলেন, বখাটে কাওছারের উৎপাতে মেধাবী শিক্ষার্থী কার্ণিজের এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা মর্মাহত, শোকাহত। দ্রুত অভিযুক্ত বখাটেকে গ্রেফতার করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। কারন বখাটের উৎপাতে যেন আর কোনো মেয়ের জীবন ঝরে না যায়।

কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আনিসুল ইসলাম আনিস মোবাইল ফোনে জানান, শুনেছি কিছুদিন আগে থানা থেকে সাবইন্সেপেক্টর রেজাউল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে সমাধান করে দিয়ে আসে। তারপরে আজকে শুনতেছি ওই মেয়েটি আত্বহত্যা করেছে।

কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মফিজুল হক জানান, আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (হাসপাতাল) মেয়েটির থেকে মরদেহ উদ্ধার করি। নিহতের লাস আগামীকাল মঙ্গলবার নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ময়না তদন্তের রির্পোটের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পিবিএ/জাকির হোসেন/বিএইচ

আরও পড়ুন...