প্রতিবন্ধী কিশোর ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে

পিবিএ,নড়াইল: নড়াইল পৌরসভার উজিরপুরে ৪ বছরের শিশু ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে কারাভোগ করেছেন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোর অপু বিশ্বাস (১৬)। গত ৩১ আগস্ট অপু’র প্রতিবেশীর চার বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগে পুলিশের নিকট গ্রেপ্তার হন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী অপু বিশ্বাস। এর আগে ৩০ আগস্ট দুপুরের দিকে চার বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করে মেয়েটির পরিবার। যার সূত্র ধরে ওইদিন রাতে সেচ্ছাসেবী সংগঠন টিম তারুণ্য হানড্রেড- এর ক্যাপ্টেন রাসেল বিল্লাহ ও তার সহযোগী সাকিব মোল্ল্যা নিজেদেরকে মাশরাফির লোক পরিচয় দিয়ে পুলিশ ছাড়াই তুলে নিয়ে যায় অপু বিশ্বাসকে। তারপর অপুর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অপুকে পুলিশে সোপর্দ করে।

উজিরপুর এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ৩০ আগস্ট ছিল আশুরার দিন। ওইদিন মেয়েটি তার বাবা মায়ের সাথে উজিরপুরের পার্শ্ববর্তী কাশিয়ারায় শিয়া সম্প্রদায়ের মহররম মেলা দেখতে যায়। তার আগে সকালে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী অপুর সাথে ওই মেয়েটি সহ আশপাশের বেশকিছু শিশুরা খেলাধুলা করে। অথচ, তখন কোনো অভিযোগ তোলা হয়নি। কিন্তু সেদিন রাতেই সাজানো হয় ধর্ষণের নাটক।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অপু বিশ্বাসের বাবা শিশির বিশ্বাসের সাথে মেয়েটির বাবার জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এছাড়াও কিছুদিন আগে ব্র্যাক থেকে শিশির বিশ্বাসকে ঋণ এনে দিতে বলে মেয়েটির পরিবার; কিন্তু তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন শিশির বিশ্বাস। এরকম নানা বিষয়ে দুই পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব বিদ্যমান ছিল।

এ বিষয়ে অপু বিশ্বাসের ভাই সজিব বিশ্বাস বলেন, আমাদের সাথে ওই মেয়েটির বাবা কাতেবর মোল্ল্যার জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এই বিরোধের প্রতিশোধ নিতেই আমার ভাইকে ধর্ষক সাজিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে তারা। মহররম মেলার দিন মেয়েটি সুস্থ অবস্থায় খেলাধুলা করছিল। হঠাৎ ওদিন রাতেই সাজানো হলো ধর্ষণের নাটক। এছাড়াও যখন মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তখনও সে সুস্থ ছিল।

শিশুটিকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পর হাসপাতাল থেকে প্রকাশিত মেডিকেল সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয়, শিশুটির শরীরে ধর্ষণ বা কোনো ধরণের বলপ্রয়োগমূলক যৌন আচরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এরপর সেচ্ছাসেবী সংগঠন টিম তারুণ্যের নেতা রাসেল বিল্লাহ অভিযোগ করেন টাকার বিমিময়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে এবং পুনরায় মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদানের দাবিতে পরদিন কিছু যুবকদের নিয়ে শহরে একটি মানববন্ধন করেন।

উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা সংবাদ সম্মেলন করে রাসেল বিল্লাহ’র অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। একইসাথে পরবর্তীতে কোনো অপপ্রচার চালালে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন।

পিবিএ/মিনহাজ/এসডি

আরও পড়ুন...