যশোরে ফাঁসি কার্যকরের আগে যা যা করলেন ধর্ষণ মামলার দুই আসামি

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে তাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের দুই আসামি আজিজুল ওরফে আজিদ ওরফে আজিজ (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালু (৫০)।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান জানান, সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিট ও ১০ টাকা ৫০ মিনিটে যথাক্রমে আজিজ ও কালুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, সিভিল সার্জন ও চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। পরে আনুসাঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ফাঁসি কার্যকরের আগে দুই আসামির শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ দেওয়া হয়। সে সময় কালু ও আজিজুল সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে কাঁদতে থাকেন। পরে দুজনের পছন্দ অনুযায়ী মুরগির মাংস ও দই খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে কারা কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে টানা ১৮ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহতদের স্বজনরা।

খাসকররার ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রাতেই তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

জানা যায়, আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা হাজিরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুন এবং তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ ও গলাকেটে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় খুনের পরদিন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুইজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দুজন হলেন একই গ্রামের সুজন ও মহি।

মামলা বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান আসামি মহি। ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এরপর আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখেন এবং আরেক আসামি সুজনকে খালাস দেন। ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান খালাসপ্রাপ্ত সুজন।

চলতি বছরের ২৭ জুলাই তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। আবেদন নামঞ্জুর সংক্রান্ত চিঠি গত ৮ সেপ্টেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষকে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ফাঁসির রায় কার্যকরের দিন নির্ধারণ করে কারা কর্তৃপক্ষ।

২০০৭ সালের ১০ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এই দুই আসামিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এতদিন এখানেই বন্দি ছিলেন তারা

আরও পড়ুন...