
মোঃ রিফাতুন্নবী রিফাত,গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধা সদর উপজেলায় মসজিদের জায়গা বিক্রি করার কথা বলে নেওয়া ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কৃষক দল নেতা রুহুল আমিন ওরফে আল আমিন ও স্বৈরাচারের দোসর যুবলীগ নেতা মোমিন মিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ মে) দুপুরে কলেজ রোড তিনগাছ তলা সংলগ্ন এলাকায় আল্-আকসা জামে মসজিদের সামনে গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়কে রাস্তা অবরোধ করে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন ওই এলাকার ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও মুসল্লীরা।
অভিযুক্ত কৃষকদল নেতা আল আমিন জেলা কৃষকদলের অন্যতম সদস্য ও যুবলীগ নেতা মোমিন গাইবান্ধা জেলা যুবলীগের অন্যতম সদস্য। এছাড়াও আল আমিন ওই মসজিদের সাবেক সভাপতি ও মোমিন সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
বিক্ষোভে এলাকাবাসী ও ক্ষুব্ধ মুসল্লীরা বক্তব্যে বলেন, রুহুল আমিন মসজিদে যায়গা বিক্রি করার কথা বলে ১১ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু টাকা নিলেও দীর্ঘদিনেও তিনি জমি দলিল করে দেননি। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার শালিস বৈঠক হলেও তিনি বিএনপির প্রভাব দেখিয়ে তার কোনো তোয়াক্কায় করেন নি। এছাড়া তার সাথে যুবলীগের নেতা ও মসজিদের সাবেক সেক্রেটারী মোমিন মিয়ার যোগসাজসে মসজিদের এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।
বিক্ষোভে ওই মসজিদের সাবেক ক্যাশিয়ার ও ব্যবসায়ী মাসুম বলেন, মসজিদে জায়গা বিক্রি করতে চাইলে আমরা রুহুল আমিন ওরফে আল আমিনকে ১১ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা দেই। এই টাকা আমাদের এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তির দানের টাকা। কিন্তু আল আমিন ১১ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে আজও যায়গা দলীল করে দেননি। তিনি ৫ শতক যায়গার বাকি ৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকাও নেয়না। আমাদের দেওয়া ১১ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকাও ফেরত দেয়না।
তিনি অভিযোগ করেন, আজ আমরা জমি এবং টাকার কথা বলতে গেলে হুমকি দেওয়া হয়। মামলার ভয় দেখানো হয়। আমরা সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে এসবের প্রতিকার চাই। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ওই মসজিদের মুসল্লী সুমন বলেন, আমরা অনেক কষ্টে মসজিদের জায়গার জন্য ১১ লাখ টাকা দিয়েছি। কিন্তু রুহুল আমিন ও মোমিন যোগসাজস করে টাকাটা আত্মসাৎ করেছেন। জমি রেজিষ্ট্রি করে দেননি।
তিনি বলেন, আমরা এসব নিয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। থানার মিটিংয়ে রুহুল আমিন বিএনপির নেতাকর্মী নিয়ে গিয়ে দুই মাসের সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই তিনি জমিতো দলিল করে দেননি। বরং নিজেদের ইচ্ছামতো বল প্রয়োগ করে বায়তুল আকসা জামে মসজিদের নাম পাল্টে সালাফী জামে মসজিদ নাম দিয়েছেন।
এছাড়া আরো বিভিন্ন সময়ে ওই জমি দলিল করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তালবাহানা করতে করতে শেষ পর্যন্ত দেননি। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছি। এসময় তিনি অনতিবিলম্বে মসজিদের নামে জমি দলিলের দাবি করা সহ অভিযুক্ত কৃষকদল নেতা রুহুল আমিন ও যুবলীগ নেতা মোমিনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে দুর্নীতিকারীর কালোহাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও স্লোগানসহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। এসময় রাস্তার উভয়পার্শ্বে যানজটের সৃষ্টি হয়। এরআগে একই স্থানে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে মসজিদে অর্থ দাতারাসহ ওই এলাকার বিভিন্ন বয়সের সহস্রাধীক মানুষ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, বিক্ষোভের শুরুতে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের বউ ক্ষিপ্ত হয়ে এসে কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে ছটকে পড়েন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা মসজিদের সালাফী জামে মসজিদের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেন এবং আল আকসা জামে মসজিদ সম্বলিত সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।