
বাংলাদেশের ঘড়িতে সময় রাত পৌঁনে ২টা পার করেছে। বেশিরভাগ মানুষের এ সময়ে গভীর ঘুমে থাকার কথা। কিন্তু অধিকাংশ চোখ ছিল নির্ঘুম। নজর ছিল টেলিভিশনের পর্দায় ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে। অপেক্ষা টাইগারদের জয় উদযাপন। আর সেই অপেক্ষার স্মরণীয় প্রতিদান দিয়েছে তামিম ইকবালের দল।
চেমসফোর্ডের মাঠে রেকর্ড গড়ে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১২ মে) ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। ম্যাচ শুরুর আগেই শুরু হয়ে যায় বৃষ্টি। তাতে ৫০ ওভার থেকে কমিয়ে ৪৫ ওভার করা হয়। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান করে আইরিশরা। জবাবে ৪৪.৩ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক আইরিশরা।
এদিন আয়ারল্যান্ডের হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন পল স্টার্লিং ও স্টিফেন ডহেনি। তবে প্রথম ওভারেই হাসান মাহমুদের পেসের কাছে পরাস্ত হন স্টার্লিং। হাসানের লেংথ বলে মুশফিকের তালুবন্দী হয়ে শূন্য রানে আউট হন তিনি।
এরপর ক্রিজে আসেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। এরপর দু’জনে মিলে ১৫ রানের জুটি গড়েন। তবে ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই স্টিফেন ডহেনিকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান হাসান। আউট হওয়ার আগে ২১ বলে ১২ রান করেন তিনি।
ম্যাচের শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আইরিশরা। তবে হ্যারি টেক্টরের ফিফটি ও আইশির দলপতির ৪২ রানে শতরান পার করে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ২৪ ওভারের তৃতীয় বলে টাইগার শিবিরে ভয় ধরানো বালবির্নিকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান শরিফুল ইসলাম। আউট হওয়ার আগে ৫৭ বলে ৪২ রান করেন এ ব্যাটার।
বাইশ গজে এসেই আক্রামণাত্মক ক্রিকেট খেলেন লরকান টাকার। প্রথম দশ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৬ রান করেন তিনি। অবশ্য পরের বলেই শরিফুলের পেসে লিটনের তালুবন্দী হন আইরিশ উইকেটরক্ষক। এতে ১১ বলে ১৬ রানে থামতে হয় তাকে।
অন্যপ্রান্তে টাইগারদের সঙ্গে একাই লড়াই চালিয়ে যান হ্যারি টেক্টর। এরপর তাকে সঙ্গ দিতে আসেন কার্টিস ক্যাম্ফার। কিন্তু টাইগার স্পিনার তাইজুলের ঘূর্ণিতে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়ে ৮ রানেই সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এরপর জর্জ ডকরেল ক্রিজে আসেন। পরে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক তুলেন নেন টেক্টর। তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে ৯৩ বল খেলেন তিনি। এর মধ্যে ৬টি ছয় ও ছয়টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন এ ডানহাতি ব্যাটার।
এরপর টাইগার বোলারদের শাসন করে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন টেক্টর। দলকে সুবিধাজনক অবস্থায় রেখে ব্যক্তিগত ১৪০ রানে ফেরেন টেক্টর। এবাদত হোসেনের ফুল লেংথের বল সোজা তার স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। এতে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
এদিকে ওয়ানডে ফরম্যাটে ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক তুলে নেন জর্জ ডকরেল। এরপর দুর্দান্ত সব শট খেলে অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। পাশাপাশি মার্ক আদাইরের ২০ রানের ছোট্ট ক্যামিওতে ৩১৯ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা।
এদিন বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া এবাদত ও তাইজুল একটি করে উইকেট তুলে নেন।