শত শত পর্ন স্টার ও যৌনকর্মীদের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ডিলিট?

পিবিএ ডেস্ক: জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া ইন্সটাগ্রাম থেকে এই বছর শত শত পর্ন স্টার ও যৌন কর্মীর অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তারা অভিযোগ করেছেন যে জনপ্রিয় মডেল বা সেলিব্রিটিরা যেভাবে এই মাধ্যমটি ব্যবহার করতে পারেন, তাদেরকে সেভাবে ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না, যার ফলে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, এমনটাই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।

পর্ন তারকাদের সংগঠন অ্যাডাল্ট পারফরমার্স অ্যাক্টর্স গিল্ডের প্রেসিডেন্ট এলানা ইভান্স বলছেন, শ্যারন স্টোন এবং অন্যান্য তারকারা যেভাবে তাদের ভেরিফায়েড পেজ চালাতে পারেন, আমাদেরও সেভাবে ইন্সটাগ্রাম চালাতে পারার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হচ্ছে।” মিস ইভান্সের গ্রুপটি এরকম ১,৩০০ জনেরও বেশি পর্ন তারকার একটি তালিকা তৈরি করেছে যাদের অ্যাকাউন্ট ইন্সটাগ্রামের মডারেটর ডিলিট করে দিয়েছে। বলা হচ্ছে, নগ্ন ছবি কিম্বা যৌনতার কোন ছবি না দেওয়া সত্ত্বেও এই সোশ্যাল মিডিয়াটির কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড বা রীতি নীতি ভঙ্গ করায় এসব অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে। ইভান্স জানান, “আমাদের প্রতি এই বৈষম্যের কারণ হচ্ছে জীবিকার জন্যে আমরা যা করছি সেটা তাদের পছন্দ নয়।

এই বিষয়ে ইন্সটাগ্রাম প্রশাসনের সঙ্গে গত জুন মাসে তাদের বৈঠকও হয়েছে। যদিও সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। পর্ন তারকাদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট অব্যাহত রয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে পর্ন তারকা জেসিকা জেমিসের মৃত্যুর পর তার অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়ার পর মিস ইভান্স খুব হতাশ হয়েছিলেন। তিনি বলেন, “যখন দেখলাম যে জেসিকার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তখন আমার হৃদয় ভেঙে পড়েছিল। ওটাই ছিল শেষ খড়কুটো।

ওই অ্যাকাউন্টের অনুসারী ছিল নয় লাখেরও বেশি। কিন্তু পরে সেটি আবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়। গত বছরের শেষের দিকে অ্যাডাল্ট পারফর্মাররা অভিযোগ করেছিলেন, কোন একজন ব্যক্তি বা এক দল ব্যক্তি মিলে তাদের অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। তাদের পরিষ্কার উদ্দেশ্য ছিল এসব অ্যাকাউন্ট ডিলিট করানো। তারা দাবি করেন যে এর পর থেকে তাদেরকে বিভিন্ন রকমের বার্তা দিয়ে হয়রানি করা হতো, ভয়-ভীতি দেখানো হতো। ওই ব্যক্তিটি ছিল অজ্ঞাত, নাম পরিচয় জানা যায় নি। পর্ন তারকারা বলছেন, ‘ওমিড’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট ব্যাবহার করে তাদেরকে বার্তা পাঠিয়ে হয়রানি করা হতো।

পর্ন তারকা ও যৌন কর্মীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন এরকম একজন অ্যাকটিভিস্ট জিঞ্জার ব্যাঙ্কস ছিলেন এই প্রচারের ক্ষেত্রে ছিলেন প্রথম টার্গেট। তাঁর দাবি, “যখন আপনি তিল তিল করে একটি অ্যাকাউন্ট গড়ে তোলেন এবং সেখানে তিন লাখের বেশি মানুষ আপনাকে অনুসরণ করে, এবং তার পরে ওই অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হয় তখন মনে হবে যে আপনি হেরে গিয়েছেন,” তাঁর মতে, “আরো বেশি হতাশার যখন সব নিয়ম কানুন মেনে চলার পরেও অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হয়।” মিস ব্যাঙ্কস বলছেন, সোশাল মিডিয়া থেকে অ্যাডাল্ট পারফর্মারদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়ে তাদেরকে আসলে বাজার থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

“লোকজন যে এসব অ্যাকাউন্টের নামে রিপোর্ট করছে তারা কি বুঝতে পারছে না এর ফলে আমাদের রোজগারে ক্ষতি হচ্ছে! নাকি তারা আমাদের জীবনের কথা চিন্তাই করে না? তারা মনে করে আমাদের এই পেশাটাই থাকা উচিত না। প্রযুক্তির উন্নতির কারণে পর্নোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রিরও আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এর ফলে নতুন নতুন মাধ্যম চালু হয়েছে এবং পর্ন তারকা ও যৌন কর্মীরা এখন নিজেই স্বাধীনভাবে এই কাজটা করতে পারেন।

পিবিএ/বিএইচ

 

আরও পড়ুন...