সেই পাইলটকে সাময়িক বরখাস্ত করা হতে পারে

পিবিএ,ঢাকা: পাসপোর্ট ছাড়াই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট নিয়ে সিনিয়র একজন পাইলটের দোহা বিমানবন্দরে পৌঁছে যাওয়া এবং সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সামনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ার কাণ্ডকে কেন্দ্র করে ঘটিত তদন্ত কমিটি রবিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন। এ কাণ্ডের জেরে বরখাস্ত হওয়া ইমিগ্রেশন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামানসহ ১০ জনকে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কমিটি।

সেই পাইলটকে সাময়িক বরখাস্ত করা হতে পারে

এ ছাড়া বিমানের শীর্ষপর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গেও বৈঠক করেছেন কমিটির সদস্যরা। এদিকে আলোচিত এ কাণ্ডের নায়ক বিমানের সিনিয়র পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ চৌধুরী সোমবার (১০জুন) সংস্থাটির একটি ফ্লাইটে করে দোহা থেকে দেশে আসছেন। সূত্রমতে, দায়িত্বহীন আচরণের কারণে দেশে ফেরার পর পরই তাকে সাসপেন্ড করা হবে।

এ প্রসঙ্গে বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল বলেছেন, ফজল মাহমুদ দেশে আসার পর আজই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমরা পৃথকভাবে এর তদন্ত করছি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠন করা তদন্ত কমিটি রবিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন।

এ দলে ছিলেন কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মদ নাসিমা বেগম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-৪) মো. হেলাল মাহমুদ চৌধুরী, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জাহাঙ্গীর আলম।

তারা পাসপোর্ট ছাড়াই ইমিগ্রেশনের অনুমতি দেওয়ায় বরখাস্ত হওয়া ইমিগ্রেশন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামানসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সাব-ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন, ৫ জুন বিকালে পাইলট ফজল মাহমুদ ইমিগ্রেশনে এলে তাকে আমি স্যার সম্বোধন করি।

তিনিসহ অন্য পাইলট ও ক্রুরা প্রায়ই ইমিগ্রেশনে আসেন বলে তাদের সবাইকেই আমি চিনি। আমি ফজল স্যারের কাছে পাসপোর্ট চাইলে জবাবে তিনি বলেন, পাসপোর্ট তার ব্যাগে আছে। যেহেতু পাইলট সব সময় যাওয়া-আসা করেন, তদুপরি তিনি সিনিয়র পাইলট, তাই তার কথায় বিশ্বাস করেছিলাম।

মূলত পাইলট ও ক্রুদের বিমানের জেনারেল ডিক্লারেশন (জিডি) দেখেই ইমিগ্রেশন করা হয়। এর পর তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনার দিন ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ যিনি ছিলেন, তাকেসহ অন্তত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর পর কমিটি বিমানের অফিসে (বলাকা) যান এবং সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

ইমিগ্রেশনের এক কর্মকর্তা জানান, তদন্ত কমিটি প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ সময় তারা ইমিগ্রেশনের নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। এমনকি ইমিগ্রেশনের নানাবিধি কার্যক্রমও পর্যবেক্ষণ করেন। অন্যদিকে বিমানেরই আরেক কর্মকর্তা জানান, সোমবার (১০জুন) ভোরে পাইলট ফজল মাহমুদ দেশে আসবেন।

তাকেও তদন্ত কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করবে। দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেওয়ায় ফজল মাহমুদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হতে পারে। এ ব্যাপারে মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। তিনি জানান, ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদের সঙ্গে যাওয়া ওই ফ্লাইটের ২ পাইলট ও ১২ কেবিন ক্রুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত কমিটি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক পাইলট জানান, পাইলটরা বিমান নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে গেলেও অনেক সময় সেসব দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে হয় না। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) নিয়ম অনুযায়ী পাইলটরা জেনারেল ডিক্লেয়ারেশন কপি নিয়ে ভ্রমণ করেন।

ওই কপি ছাড়া পাসপোর্ট সঙ্গে রাখতে হয়। ফজল মাহমুদ একজন সিনিয়র অভিজ্ঞ পাইলট। তিনি প্রায়ই ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করেন। তিনি পাসপোর্ট না নিয়ে কীভাবে গেলেন, বুঝতে পারছি না!

পিবিএ/আরআই

আরও পড়ুন...