ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে মোংলা বন্দরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

পিবিএ, মোংলা: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে মোংলার পশুর নদীতে একটি ট্যুরিস্ট লঞ্চ ডুবে গেছে। এছাড়া ১২৫টি কাঁচা ঘরবাড়ী পুরোপুরি বিধ্বস্ত এবং ৩২৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিপুল সংখ্যক গাছপালা উপড়ে গেছে। এছাড়া প্লাবিত হয়েছে প্রায় দেড় হাজার চিংড়ি ঘের। তবে ঝড়ের আঘাতে এখানে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে মোংলা বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকতে দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। সংকেত কমলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন বলেন, যেহেতু সিগনাল নামিয়ে আনা হয়েছে এখন কর্তৃপক্ষ বৈঠক শেষে কখন থেকে বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাসের কাজ শুরু করা হবে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো: রাহাত মান্নান বলেন, সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া লোকজনের মাঝে বৃহস্পতিবার সকালেও খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার দিনে এবং রাতে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নেয় ৪৮ হাজার মানুষ। ঝড় কিছুটা কমে যাওয়ায় তারা এখন নিজ বাড়ীঘরে চলে যাচ্ছেন। তবে ঝড়ে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের তালিকা পাওয়ার পর জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
বন্দরের পশুর চ্যানেলের তীরবর্তী কানাইনগর, কলাতলা, সুন্দরতলাসহ বিভিন্ন জায়গার দুর্বল ভেঁড়ী বাঁধের কয়েকটি জায়গা ধ্বসে গেছে। তবে আবহাওয়া অফিসের দেয়া পূবার্ভাস অনুযায়ী কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসের কথা বলা হলেও মোংলা সমুদ্র বন্দরের পশুর চ্যানেলসহ সুন্দরবনের নদ-নদীর পানির উচ্চতা অনেকটা স্বাভাবিকই ছিল। ফলে মোংলাসহ আশপাশ এলাকায় জলোচ্ছাসে প্লাবিত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। যদিও ভেঁড়ি বাঁধ ভেঙ্গে কিংবা উপচে জোয়ারের যে পানি বাঁধের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিল তা আবার ভাটার সময়ে নেমে গেছে।
পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে দুর্গতদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করছেন পৌর মেয়র আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আালী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেক পরিবারে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো: রাহাত মান্নান, পৌর মেয়র জুলফিকার আলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতার্ মো: নাহিদুজ্জামান। উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাহাত মান্নান বলেন, আম্পানে কম বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এমন ২ হাজার ৪শ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া ৩ হাজার শিশুর জন্য শিশু খাদ্যও দেয়া হচ্ছে।
এদিকে আম্পানের তান্ডবে পূর্ব সুন্দরবনের ঢাংমারী ষ্টেশন, লাউডোব, দুবলা ও মরাপশুর ক্যাম্পের জেটি, ঘরবাড়ীসহ অন্যান্য স্থাপনা এবং বনের গাছপালার বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকতার্ মো: বেলায়েত হোসেন। তবে এতে কোন জেলে নৌকা ডুবি, জেলে নিঁখোজ কিংবা হতাহতের খবর নেই বলেও জানান তিনি।

পিবিএ/এনামুল হক/এমআর

আরও পড়ুন...