
সোহাগ হাসান, সিরাজগঞ্জ: বেলকুচিতে সৎ খালা ও তার দুই সন্তানকে হত্যার দায়ে আইয়ুব আলী সাগর নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন। সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুর রহমান নিশ্চিত করেন।
মামলা ও রায় সূত্রে জানা যায় , রওশনারা খাতুন (৩০) তার দুই শিশু পুত্র জিহাদ হোসেন (১০) ও মাহিন (৩) কে নিয়ে বেলকুচি থানাধীন মরুপুর গ্রামে নিজ বাড়ীতে বসবাস করতেন।
তাঁত ফ্যাক্টরীতে সুতার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন রওশনারা।
সৎ ভাগিনা আসামী আইয়ুব আলী ঋণগ্রস্ত থাকায় ঘটনার দুই দিন পূর্বে রওশনারার বাড়ীতে এসে রওশনারার ব্যবহৃত ট্রাংক ও জিনিসপত্র দেখে তার ধারণা হয় ট্রাংকের মধ্যে অনেক টাকা পয়সা আছে।
সাগর সেই টাকা পয়সা নেয়ার পরিকল্পনা করে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ রাতে রওশনারার বাড়ীতে বেড়াতে আসে এবং রাতে খাওয়া দাওয়া করে রওশনারার ঘরে শুয়ে পড়ে। সে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী গভীর রাতে উঠে ট্রাংকের তালা খুলে ট্রাংক থেকে টাকা বের করার চেষ্টা করলে শব্দে রওশনারার ঘুম ভেঙ্গে যায়। তখন আসামী আইয়ুব আলী মসলা বাটার পাথরের শিল দিয়ে রওশনারার মাথায় আঘাত করলে রওশনারা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এরপর আসামি সাগর রওশনারাকে গলা টিপে হত্যা করে। এসময় রওশনারার ৩ বছর বয়সী পুত্র মাহিন জেগে উঠে কান্নাকাটি শুরু করলে আসামি তাকেও গলা টিপে হত্যা করে। এরপর রওশনারার অপর ছেলে জিহাদের ঘুম ভেঙ্গে গেলে আসামি আইয়ুব আলী সাগর তাকেও গলা টিপে হত্যা করে ঘরের দরজা বাহির থেকে শিকল আটকিয়ে চলে যান। রওশনারার ভাই মো. নুরুজ্জামাল বাদি হয়ে অক্টোবরের ১ তারিখে বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামী মো. আইয়ুব আলী সাগর গ্রেপ্তার হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য মোট ১৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেন। সাক্ষ্য শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আজ আসামী মো. আইয়ুব আলী সাগর এর উপস্থিতিতে এই রায় দেন।###