
পিবিএ ডেস্ক: আজ ২৬ মার্চ, মহান জাতীয় দিবস।২৫ মার্চে ভয়াল কালো রাত্রিতে ঢাকায় পাকিস্তানী হানাদার সৈন্যদের পৈশাচিক গণহত্যার পরের দিন ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা দেয়া হয়।গণহত্যার শোককে শক্তিতে পরিণত করে বাঙালী মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নয় মাসের দীর্ঘ রক্ষক্ষয়ী যুদ্ধের পর লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয় বাংলা স্বাধীনতা।আকাশে উদিত হয় সবুজ জমিনের বুকে লক্ষ শহীদের টকটকে লাল রক্ত ঢেলে দেয়া স্বাধীনতার সূর্য পতাকা।এ এক বিশাল সফলতা, এর গৌরব গাঁথা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। যার কারণে আজ আমরা পঁচিশে মার্চের ভয়াল গণহত্যার শোক কাটিয় পরের দিনই স্বাধীনতার জয়গান গাইতে পারছি।পাশাপাশি এই দুইটি দিনের তাৎপর্য তাই অনেক গভীর।যত বড় আঘাতই আসুক না কেন, শোক যত গভীরই হোক, শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।২৬ মার্চ তাই আমাদের কাছে বারবার আসে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নিয়ে।যতই ২৫ মার্চের কালো রাত্রি নেমে আসুক, তারপরই উদিত হবে ২৬ মার্চের লাল সূর্য।
স্বাধীনতা লাভের পর অতিকান্ত্র হয়ে গেছে ৪৯টি বছর।আমরা একটি ভূখণ্ড পেয়েছি, বিশ্ব মানচিত্রে আমাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র অবস্থান রয়েছ, আমাদের একটি লাল সূর্যের পতাকা রয়েছে, আমরা মনের সুখে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারি, কিন্তু তারপরও নানা কারণে আবার কেন যেন মনে হচ্ছে আমরা পথ হারিয়ে ফেলছি নাতো? কারণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় ”স্বাধীনতা”, গণতন্ত্র”, ”মানবাধিকার” শব্দগুলো আমাদের কাছে যে অর্থ, তাৎপর্য ও প্রেরণা নিয়ে আমাদেরকে উজ্জীবিত করেছিল, স্বাধীনতার এতগুলো বছর পর আমরা এখন ভিন্ন অর্থ শুনতে পারছি।যে স্বাধীনতা আন্দোলন তথা মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাই ছিল পশ্চিম পাকিস্তানীদের নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব ও মালিকানা থেকে এই দেশ ও দেশের মানুষক মুক্ত করে জনগণের মালিকানা, তাদের নেতৃত্ব ও শাসন তথা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, সেই গণতন্ত্র তথা জনগণের স্বাধীন মতামতের বা ভোটাধিকারের মাধ্যমে তাদের নিজেদের পছন্দ মত নেতৃত্ব বাছাই ও সরকার গঠনের মাধ্যমে জনগণের শাসন, কর্তৃত্ব ও মালিকানা প্রতিষ্ঠার অধিকার আজ ভুলুন্ঠিত। এখন রাতের আঁধারে জনগণের ভোটাধিকার ছিনতাই হয়ে যায়, জনগণ এখন এখন নির্বাচনবিমুখ।তাতে কি, বলা হচ্ছে, কতজন ভোট দিল বা না দিল এটা কোন বিষয় নয় এবং সেটা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথাও নেই।এখন আবার ঘোষণা শোনা যাচ্ছে, উন্নয়নের জন্য বাকশাল তথা একদলীয় শাসন প্রয়োজন, কোন বিরোধী দল দরকার নেই, কোন জবাবদিহীতার প্রয়োজন নেই।মনে হচ্ছে আবার ঘনিয়ে আসছে অন্ধকার।
তাই আজকের এই দিনটি হোক আদর্শের দিকে ফিরে তাকানোর দিন, লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ ও তাদের স্বপ্নের কথা স্মরণ করে নতুন করে উজ্জীবিত হওয়ার দিন।কারণ পঁচিশে মার্চের কালো রাত্রির পরেই মাথা উঁচু করে এগিয়ে আসে গর্ব ও অহংকারের ২৬ মার্চ, যেমন করে কালো মেঘের আঁড়ালে লুকিয়ে থাকে লাল সূর্য।
পিবিএ/এএইচ